তাদের পদত্যাগের বিষয়টি অবহিত করে শনিবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
Published : 10 Aug 2024, 10:16 PM
প্রধান বিচারপতির পর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আরও পাঁচ বিচারক পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগ করা বিচারপতিরা হলেন- এম ইনায়েতুর রহিম, আবু জাফর সিদ্দিকী, জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. শাহিনুর ইসলাম ও কাশেফা হোসেন।
তাদের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করেছেন জানিয়ে শনিবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-১ এর উপসচিব মোহাম্মদ ওসমান হায়দারের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পাঁচজন বিচারপতি রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান এবং রাষ্ট্রপতি তা গ্রহণ করেছেন।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ‘সংস্কারের’ যে দাবি উঠেছে, তার ধাক্কায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এই পরিবর্তন এল।
এর আগে দুপুরে খবর আসে এই পাঁচ বিচারপতি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শেখ হাসিনার আমলে নিয়োগ পাওয়া সব বিচারপতির পদত্যাগ ও নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের দাবিতে শনিবার সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা।
ক্ষমতার পালাবদলের ধারায় শেষপর্যন্ত শনিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগে বাধ্য হন। তার পদত্যাগের পর নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে নাটকীয়তা তৈরি হয়।
প্রধান বিচারপতির সরে যাওয়ার পর মো. আশফাকুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি করার যে খবর চাউর হয়েছিল, তা আন্দোলনকারীরা ‘প্রত্যাখ্যান’ করে।
মন্ত্রণালয় জানায়, ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিয়োগের তথ্যটি ‘বিভ্রান্তিকর’।
পরে দেশের পঞ্চবিংশতম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হাই কোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ; যাকে নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বলা হয়, শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে তার এ নিয়োগ কার্যকর হবে।
শনিবার রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বলা হয়, শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে তার এ নিয়োগ কার্যকর হবে।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেহেতু তিনি (সৈয়দ রেফাত আহমেদ) সরাসরি হাই কোর্ট ডিভিশন থেকে প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন, সেক্ষেত্রে একবারই শপথ নিলে হবে। তিনি আপিলেট ডিভিশন এবং প্রধান বিচারপতি হিসেবে একইসঙ্গে শপথ নেবেন।”
হাই কোর্টের বিচারপতিদের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন। দুই বছর পর ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল হাই কোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
তার বাবা ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বাংলাদেশের প্রথম অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল। প্রয়াত ইশতিয়াক আহমেদ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুইবারের উপদেষ্টা ছিলেন।
রেফাত আহমেদের মা জাতীয় অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক ছিলেন।
সৈয়দ রেফাত ১৯৮৪ সালে ঢাকা জেলা আদালতে এবং ১৯৮৬ সালে হাই কোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন।