Published : 06 May 2025, 09:18 PM
দেশে ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অসুস্থ মাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়ে হাজির হয়েছেন তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। সেখানে দীর্ঘদিন পর মা ও মেয়ের মধ্যে আবেগঘন সাক্ষাৎ হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে ধানমন্ডির স্কয়ার হাসপাতালে যান। তার সঙ্গে ছিলেন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।
অসুস্থ হয়ে গত ২ মে থেকে এ হাসপাতালে ভর্তি আছেন জোবাইদার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু। তিনি ঢাকার ধানমন্ডিতে মাহবুব ভবনে বসবাস করেন। জোবাইদার বাবা সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান প্রয়াত হয়েছেন ১৯৮৪ সালে।
সৈয়দা ইকবাল দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিল-রোগে ভুগছেন। কয়েক বছর আগে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে একটি হাসপাতালে তাকে নেওয়া হয়েছিল।
লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুই পুত্রবধূ- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথিকে নিয়ে আসেন।
মঙ্গলবার সকালে তারা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। সেখান থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে গুলশানের বাসায় ফিরতে বেজে যায় দুপুর দেড়টা।
১৭ বছর পর দেশে এলেন জোবাইদা। ২০০৮ সালে অসুস্থ তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি ও তাদের মেয়ে জাইমা রহমানও গিয়েছিলেন।
এরপর তারেকের সঙ্গে জোবাইদার বিরুদ্ধেও তৎকালীন সরকারের বিভিন্ন মামলা দায়ের করে। ফলে ১৭ বছর আর দেশে ফেরা হয়নি তার।
শাশুড়ির সঙ্গে দেশে ফিরে গুলশানের বাসায় পৌঁছানোর ঘণ্টা ছয়েক পর বিকালে মামী শাশুড়ি কানিজ ফাতেমাকে নিয়ে স্কয়ার হাসপাতালে আসেন জোবাইদা। হাসপাতালটির কেবিন ব্লকে সেখানে তার মা চিকিৎসাধীন আছেন। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন বড় বোন শাহীনা জামান। কেবিনে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘদিন বাদে দেখা হলে সেখানে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয় বলে হাসপাতালে উপস্থিত বিএনপির নেতারা জানান।
জোবাইদা রহমানের স্কয়ার হাসপাতালে আসা উপলক্ষে আগে থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
হাসপাতালে পৌঁছালে সুরভী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় জোবাইদাকে।
‘সুরভী ফাউন্ডেশন’ এর প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু। সংগঠনটি মূলত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কাজ করে। এ কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে ‘স্বাধীনতা পদক’ প্রদান করে সরকার।
এসময় বিএনপি নেতাদের মধ্যে রশিদুজ্জামান মিল্লাত, নাসির উদ্দিন অসীম, অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম শামসুল ইসলাম শামস, নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু, মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমনসহ দলের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন।
রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত জোবাইদা হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে ছিলেন। পরে তিনি ধানমন্ডিতে পৈত্রিক বাড়ি ‘মাহবুব ভবনে’ যান। সেখানে সুরভী ফাউন্ডেশনের শিশুরা তাকে স্বাগত জানান। তিনি শিশুদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান।
বিএনপি নেতারা বলেন, রাতে আবার ফিরোজায় ফিরে যাবেন জোবাইদা।
দুই দিন আগে থেকে ধানমন্ডি ৫ নং সড়কে ‘মাহবুব ভবনকে’ প্রস্তুত করা হয়েছে জোবাইদার আসা উপলক্ষে জন্য। সেখানে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা বসানো হয়েছে।
এ বাসায় জোবাইদার মা এবং তার বড় বোন বসবাস করেন।