কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে মেট্রোরেল স্টেশনে ভাঙচুরের পর থেকেই চলাচল বন্ধ রয়েছে।
Published : 10 Aug 2024, 11:48 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে হামলা-ভাঙচুরের কারণে চলাচল বন্ধ থাকা মেট্রোরেলের কর্মচারীরা ‘বৈষম্যহীন’ বেতন কাঠামোসহ ছয় দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন।
দ্বিতীয় দিনের মত শনিবার তারা কর্মবিরতি এ পালন করেন; এদিন উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের ডিপোতে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন।
কোটা আন্দোলনের মধ্যে গত ১৮ জুলাই মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করা হলে ওই দিন বিকেল ৫টায় মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়। এরপর থেকেই বন্ধ আছে মেট্রোরেল চলাচল।
চলাচল বন্ধ থাকার মধ্যেই বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি ঘোষণা করেন মেট্রোরেলের ১০ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে টিকেট মেশিন অপারেটর সাবিনা আক্তার বলেন, “মেট্রোরেল চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সঠিক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে উঠেনি। নির্দিষ্ট সার্ভিস রুলস না থাকায় কর্মচারীরা তাদের প্রাপ্য বিভিন্ন ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ও কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠার সুযোগ থাকছে।”
তার দাবি, মেট্রোরেলের গ্রেড ১ থেকে গ্রেড ৯ পর্যন্ত কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেলের ২ দশমিক ৩ গুণ হারে এবং গ্রেড ১০ থেকে গ্রেড ২০ কর্মচারীগণ জাতীয় বেতন স্কেলের ২ গুণ হারে মূল বেতন পান, যেটি ‘বৈষম্যমূলক’। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং এ বিষয়ে বারবার অবহিত করলে তিরস্কার ও চাকরি হতে অব্যাহতির ভয় দেখানো হয়।”
দাবিগুলো হল-
>> বর্তমান বেতন কাঠামো পরিবর্তন করে ‘বৈষম্যহীন’ বেতন কাঠামো, অর্থাৎ সকল গ্রেডের একইরকম বেতন কাঠামো যা জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ এর ২ দশমিক ৩ গুণ হারে যোগদানের তারিখ হতে বকেয়াসহ দিতে হবে।
>> চাকরিতে যোগদানের তারিখ হতে বকেয়াসহ সিপিএফ সুবিধা দিতে হবে।
>> রাষ্ট্রের অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের মেট্রোরেলের সঙ্গে সমন্বয় করে ১০ম গ্রেডের উচ্চতর পদ, ১৫তম ও ১৬তম গ্রেডের পদসমূহের গ্রেড উন্নয়ন করে ‘অর্গানোগ্রাম’ করতে হবে।
>> শিক্ষানবিশকাল শেষে অন্যান্য সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির ন্যায় যোগদানের তারিখ হতে স্থায়ীকরণ (নিয়মিতকরণ) করতে হবে।
>> স্টেশন ও ডিপোসহ সকল স্থানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ডিউটি প্রদান করতে হবে।
>> কর্মক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ‘স্বৈরাচারী’ মনোভাব ও ‘বৈষম্যমূলক’ আচরণ এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের যেন না ঘটতে পারে-সেই নিশ্চয়তা প্রদান ও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।