দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা ভূখণ্ডটিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবেশ করতে না দেওয়ার জন্য ইসরায়েলকে দোষারোপ করেছে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো।
Published : 14 Mar 2024, 09:44 AM
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা বিভিন্ন প্রবেশপথ দিয়ে দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় মানবিক ত্রাণের ‘বন্যা’ বইয়ে দেবার চেষ্টা করবে।
পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের নির্বিচার হামলায় গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, নিহত হয়েছে ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আর ভূখণ্ডটির ২৩ লাখ বাসিন্দারা প্রায় সবাই ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে।
তিন দিক থেকে ইসরায়েলের ঘেরের মধ্যে থাকা গাজায় কোনো সরবরাহ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েলি বাহিনী। একপাশে মিশরের সঙ্গে গাজার সীমান্ত থাকলেও সেই রাফা ক্রসিংও নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই অবস্থায় গাজার বাসিন্দারা দুর্ভিক্ষের প্রান্তে আছে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো।
তারা বলছে, দ্রুত খাদ্য সহায়তা বাড়ানো না গেলে গাজার বহু মানুষ অনাহারে মারা যাবে। ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ বেশ কিছু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ভূখণ্ডটিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবেশ করতে না দেওয়ার জন্য ত্রাণ সংস্থাগুলো ইসরায়েলকে দোষারোপ করেছে।
কিন্তু ইসরায়েল বলছে, গাজায় কী পরিমাণ ত্রাণ যাবে তার কোনো সীমা নির্ধারণ করেনি তারা। ত্রাণ সংস্থাগুলিই সরবরাহ পাঠাতে দেরি করছে বলে উল্টো অভিযোগ করেছে তারা।
কিন্তু এমন দাবি করলেও আরও বেশি কিছু করার জন্য ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্যদের বাড়তে থাকা চাপের মুখে পড়েছে তারা।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার দেশটির সামরিক বাহিনীর শীর্ষ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হ্যাগারি একদল বিদেশি সাংবাদিককে বলেছেন, “আমরা ওই এলাকাটি ভাসিয়ে দিতে চেষ্টা করছি, মানবিক ত্রাণ দিয়ে ভাসিয়ে দেবো।”
এদিন সকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, বিশ্ব খাদ্য সংস্থার ছয়টি ত্রাণবাহী ট্রাক নিরাপত্তা বেষ্টনির ৯৬তম গেইট দিয়ে গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাংশে প্রবেশ করেছে।
গাজার এই অংশটিতেই ক্ষুধার সংকট সবচেয়ে তীব্র, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
হ্যাগারি জানান, এ ধরনের আরও ত্রাণবহর যাবে এবং অন্য পয়েন্টগুলো দিয়ে আরও সরবরাহ প্রবেশ করবে, পাশাপাশি বিমান থেকে ত্রাণের প্যাকেজ ফেলা ও সাগরপথে জাহাজ ভর্তি ত্রাণ আসাও চলতে থাকবে।
তবে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করা সংকট সমাধানের একটি অংশ মাত্র বলে জানান তিনি। কীভাবে এসব ত্রাণ সবার মধ্যে সুষ্ঠু ও কার্যকরভাবে বিতরণ করা যাবে তা সংকট সমাধানের আরেকটি অংশ বলে স্বীকার করেন তিনি।
গাজা ভূখণ্ডে ত্রাণ সরবরাহের আরও প্রবেশপথ খুলে দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্য বিশ্ব শক্তিগুলো ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য কয়েকটি দেশ বিমানযোগে গাজায় ত্রাণ ফেলা শুরু করেছে। সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপকূলে একটি অস্থায়ী ডক নির্মাণও শুরু করেছে।
আরও পড়ুন:
রাফাহের ত্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলায় জাতিসংঘের ১ কর্মী নিহত