গাজায় অনাহারে মরছে শিশুরা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

সংস্থাটির প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস জানিয়েছেন, খাবারের অভাবে ১০টি শিশুর মৃত্যু হয় আর সেখানে ‘গুরুতর পর্যায়ের অপুষ্টি’ বিরাজমান।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2024, 04:57 AM
Updated : 5 March 2024, 04:57 AM

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার উত্তরাংশের শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে।

সংস্থাটি রোববার গাজার আল-আওদা ও কামাল আদওয়ান হাসপাতাল পরির্দশন করে সেখানে ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’ দেখেছে বলে তেদ্রোস জানান। অক্টোবরের প্রথমদিকের পর থেকে এই প্রথম সেখানে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তারা।

সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে পরিদর্শনে তিনি যা দেখেছেন তুলে ধরেছেন, জানিয়েছে বিবিসি।

তিনি লিখেছেন, খাবারের অভাবে ১০টি শিশুর মৃত্যু হয় আর সেখানে ‘গুরুতর পর্যায়ের অপুষ্টি’ বিরাজমান, হাসপাতাল ভবনগুলো ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।

রোববার হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় অন্তত ১৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানায়, রোববার গাজার দক্ষিণাংশের শহর রাফায় একই কারণে আরেকটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

Also Read: গাজার প্রায় ৬ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে এক পা দূরে: জাতিসংঘ

Also Read: ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় কথা বললেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস

ড. তেদ্রোস লিখেছেন, “গাজার উত্তরাংশের হাসপাতাল ভবনগুলো ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, অপুষ্টির মাত্রা তীব্র, অনাহারে শিশুরা মারা যাচ্ছে; জ্বালানি, খাবার ও ওষুধের গুরুতর সংকট বিরাজমান।”

হিসাব অনুযায়ী গাজার উত্তরাংশে তিন লাখ মানুষ সামান্য খাবার ও পরিষ্কার পানি নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে।

“খাবারের অভাবে ১০ শিশুর মৃত্যু হয়,” সামাজিক মাধ্যম এক্স প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন তিনি।

তিনি লিখেছেন, “গাজার উত্তরাংশে আরও নিয়মিত যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার চেষ্টা সত্ত্বেও পাঁচ মাসের মধ্যে এই প্রথম ডব্লিউএইচও সেখানে যেতে পারল।

“এর মধ্যে বিশেষভাবে আল-আওদা হাসপাতালের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর, সেখানে একটি ভবন ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।”

গত সপ্তাহে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ব্যাপক দুর্ভিক্ষ ‘প্রায় অনিবার্য’।

জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সতর্ক করে জানিয়েছেন, গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে এক চতুর্থাংশ, অর্থাৎ অন্তত ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষ থেকে আর এক পা দূরে আছে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে তিনি জানান, গাজার দুই বছরের কম বয়সী প্রতি ছয়টি শিশুর মধ্যে একজন তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে ও দ্রুত ওজন হারাচ্ছে। ভূখণ্ডটির কার্যত ২৩ লাখ বাসিন্দার সবাই বেঁচে থাকার জন্য ‘শোচনীয়ভাবে অপর্যাপ্ত’ খাদ্য ত্রাণের ওপর নির্ভর করছে।

জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক বলেছেন, “আমরা যে শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলাম তাই ঘটছে, অপুষ্টি গাজা ভূখণ্ডে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটাচ্ছে।”

রোববার এক বিবৃতিতে আদেশ খোদর বলেন, “এই শোচনীয় ও ভয়াবহ মৃত্যুগুলো মানবসৃষ্ট, এগুলো অনুমানযোগ্য ও পুরোপুরি প্রতিরোধযোগ্য ছিল।”

গাজায় পাঁচ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৩০৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে ছিটমহলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।