জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় আশু পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ ‘প্রায় অনিবার্য’।
Published : 29 Feb 2024, 11:55 AM
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে এক চতুর্থাংশ- অন্তত ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ- দুর্ভিক্ষ থেকে আর এক পা দূরে আছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন ত্রাণ কর্মকর্তা নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় আশু পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ ‘প্রায় অনিবার্য’।
“যখন শত্রুতা অব্যাহত আছে আর গাজার দক্ষিণাঞ্চলের জনাকীর্ণ এলাকাগুলোতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে তখন তেমন কিছু করা সম্ভব হবে না, তাই আমরা আবারও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছি,” বলেছেন জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দপ্তরের সমন্বয় পরিচালক রমেশ রাজাসিংহাম।
নিরাপত্তা পরিষদকে তিনি জানান, গাজার দুই বছরের কম বয়সী প্রতি ছয়টি শিশুর মধ্যে একজন তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে ও দ্রুত ওজন হারাচ্ছে আর ভূখণ্ডটির কার্যত ২৩ লাখ বাসিন্দার সবাই বেঁচে থাকার জন্য ‘শোচনীয়ভাবে অপর্যাপ্ত’ খাদ্য ত্রাণের ওপর নির্ভর করছে।
রাজাসিংহাম বলেন, “গাজায় ন্যূনতম সরবরাহ পেতেও জাতিসংঘ ও ত্রাণ গোষ্ঠীগুলোকে অপ্রতিরোধ্য বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।”
এসব বাধার মধ্যে ক্রসিং বন্ধ, চলাচল ও যোগাযোগের ওপর বিধিনিষেধ, কঠোর তল্লাশি প্রক্রিয়া, অস্থিরতা, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও অবিস্ফোরিত গোলা অন্যতম বলে জানান তিনি।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির উপ-নির্বাহী পরিচালক কার্ল স্কাউ নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, “যদি কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয় তাহলে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি নিজেদের তৎপরতা দ্রুত প্রসারিত ও ব্যাপ্তি বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত আছে।
“কিন্তু ইতোমধ্যে, গাজায় পর্যাপ্ত পরিমাণে অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ আনতে না পারায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে এবং মাঠ পর্যায়ে আমাদের কর্মীরা তৎপরতা চালানো পক্ষে প্রায় অসম্ভব পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে।”
জাতিসংঘে নিযুক্ত গিনির রাষ্ট্রদূত ক্যারোলিন রড্রিগেস-বারকেট ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, “যুদ্ধের একটি পদ্ধতি হিসেবে অনাহারকে ব্যবহার করা অবৈধ। গাজার জনগণের বিরুদ্ধে যারা সচেতনভাবে এটি ব্যবহার করছে গিনি তাদের নিন্দা জানায়।”
আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত ওমর বেন্দজামা বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের অভিযান ফিলিস্তিনের বেসামরিক জনগণের জন্য একটি সমষ্টিগত শাস্তি। আমাদের নীরবতা ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যার ও অনাহারে রাখার লাইসেন্স দিয়েছে।”
গাজায় প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: