নেতানিয়াহুর জোট সরকার চুক্তিটি অনুমোদন করতে দেরি করছে আর এই দেরির জন্য তারা হামাসকে দায় দিয়েছে।
Published : 17 Jan 2025, 10:17 AM
গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে হওয়া চুক্তি চূড়ান্ত অনুমোদন করতে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা শুক্রবার বৈঠকে বসবে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর।
বহু প্রতিক্ষিত এই চুক্তি অনুমোদন করতে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার বৃহস্পতিবারই বসার কথা ছিল, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রীদের মধ্যে স্পষ্ট বিভেদ নিয়ে চলা নেতানিয়াহুর জোট সরকার বৈঠকটিতে বসতে দেরি করছিল আর এই দেরির জন্য তারা হামাসকে দায় দেয়।
কিন্তু শুক্রবারের প্রথম ঘণ্টাগুলোর মধ্যেই নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, অনুমোদন আসন্ন।
এক বিবৃতিতে দপ্তরটি বলেছে, “আলোচনারত দলটি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে জানিয়েছেন জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে চুক্তির বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছানো গেছে।”
এতে আরও বলা হয়, প্রথমে শুক্রবার ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা বৈঠক করবে, পরে চুক্তিটি অনুমোদন করতে পুরো মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসবে।
রয়টার্স জানিয়েছে,মন্ত্রিসভার পূর্ণ বৈঠক শুক্রবারই হবে না শনিবার অথবা রোববার যুদ্ধবিরতি শুরু হতে কোনো বিলম্ব হবে কি না, তাৎক্ষণিকভাবে সেটি পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, ওয়াশিংটন বিশ্বাস করে চুক্তিটি লাইনেই আছে এবং ১৫ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতি প্রত্যাশা অনুযায়ী ‘এই সপ্তাহের শেষ দিনটিতেই (রোববার)’ কার্যকর হবে।
বৃহস্পতিবার সিএনএনকে তিনি বলেছেন, “আমরা এমন কিছু দেখছি না যা আমাদের বলছে যে এটি এই পর্যায়ে এসে লাইনচ্যুত হয়ে যাচ্ছে।”
গাজায় বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী একটি গোষ্ঠী ‘দ্রুত অগ্রসর হওয়ার জন্য’ নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম ছয় সপ্তাহের পর্বে গাজা থেকে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা হামাসের।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৃহস্পতিবার বলেছেন, আলোচনার ‘ঢিলা শেষ’ অংশটির সমাধান করা দরকার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হামাস মুক্তি দিতে চায় এমন কিছু জিম্মিকে শনাক্ত করা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ও নিবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দুই দূত এবং মিশরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীরা দোহায় আছেন আর তারা এটি সমাধানে কাজ করছেন।
হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রেশিক জানিয়েছেন, তার দল যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আছে।
বুধবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা আসার পরপরই গাজায় আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে উদযাপন শুরু হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলের তীব্র বিমান হামলা তাদের উৎসাহকে দুঃখ ও ক্ষুব্ধতায় পরিণত করে।
বৃহস্পতিবার রাতে ফিলিস্তিনের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চুক্তি ঘোষিত হওয়ার পর থেকে শুরু হওয়া তীব্র হামলায় দিনব্যাপী অন্তত ৮৬ জন নিহত হয়েছেন। শেষ খবর পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত ছিল।
আরও পড়ুন:
যা যা আছে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে
উত্তেজনাপূর্ণ ৯৬ ঘণ্টা আলোচনার পর গাজা চুক্তি: মার্কিন কর্মকর্তা
যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আগে গাজায় ইসরায়েলের তুমুল হামলা, নিহত ৮১