পেজার বিস্ফোরণে নিহত চারজনের জানাজার সময় সেখানে অন্তত একটি ওয়াকিটকির বিস্ফোরণ ঘটেছে।
Published : 18 Sep 2024, 11:47 PM
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল ও বৈরুতের শহরতলীজুড়ে বুধবার হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত ওয়াকিটকিগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, এতে অন্তত ১৪ জন নিহত ও আরও ৪৫০ জন আহত হয়েছেন বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসির এক সাংবাদিককে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের পেজার বিস্ফোরণে নিহত চারজনের জানাজার সময় সেখানে অন্তত একটি ওয়াকিটকির বিস্ফোরণ ঘটেছে।
একদিন আগে মঙ্গলবার লেবাননজুড়ে গোষ্ঠীটির যোদ্ধাদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত পেজারে বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ ১২ জন নিহত এবং আরও প্রায় তিন হাজার মানুষ আহত হন।
এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হিজবুল্লাহ ও লেবাননের প্রধানমন্ত্রী। বিশ্লেষকদের ধারণা, হিজবুল্লাহর যোগাযোগ ডিভাইসগুলোতে এসব বিস্ফোরণ ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিকল্পনার ফল। যদিও ইসরায়েল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
বুধবার ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দেশটির সামরিক বাহিনীর রামাত ডেভিড বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট বলেন, “ইসরায়েল যুদ্ধের একটি নতুন পর্ব খুলছে আর যুদ্ধোপকরণ ও বাহিনীগুলো সরিয়ে আনার মাধ্যমে যুদ্ধের ভরকেন্দ্র উত্তর দিকে সরে আসছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দৃঢ়তা প্রয়োজন হবে। এই যুদ্ধে দরকার ব্যাপক সাহস, দৃঢ় সংকল্প ও উদ্যম।”
ইসরায়েল তার মনোযোগ হিজবুল্লাহর দিকে এবং লেবাননের সীমান্ত সংঘাতের দিকে সরাচ্ছে, গ্যালান্টের এসব মন্তব্যকে তার ইঙ্গিত হিসেবে ধরে নেওয়া যায় বলে জানিয়েছে বিবিসির।
হিজবুল্লাহর ধারবাহিক রকেট ও ড্রোন হামলায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
চলতি সপ্তাহের প্রথমদিকে গ্যালান্ট বলেছিলেন, কূটনীতি ব্যর্থ হলে সামরিক পদক্ষেপ একমাত্র বিকল্প।
তার এ মন্তব্যে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত আরও বাড়বে, এমন ধারণা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর প্রধান বলেছেন, তাদের অনেক সক্ষমতা আছে যা তারা এখনও সক্রিয় করেননি আর প্রতিটি ধাপে হিজবুল্লাকে যে মূল্য চুকাতে হবে তা অনেক বেশি হবে।
মঙ্গলবারের পেজারের পর বুধবারের ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
পেজার আক্রমণে পর হিজবুল্লাহ কিছু সময়ের জন্য বিশৃঙ্খল অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল। বুধবার ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের গোলন্দাজ বাহিনীর অবস্থানের ওপর রকেট হামলা চালিয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি গোলা বিনিময় শুরু হয়। এই পাল্টাপাল্টি হামলা দিন দিন তীব্র হতে শুরু করে আর এতে মধ্যপ্রাচ্যের ওই অঞ্চলজুড়ে বড় ধরনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, ওই অঞ্চলজুড়ে বড় ধরনের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি ও ইরানের মতো আঞ্চলিক শক্তি জড়িয়ে পড়তে পারে
আরও পড়ুন:
হিজবুল্লাহর '৫০০০ পেজারে বিস্ফোরক বসিয়েছিল' ইসরায়েল