ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
Published : 13 Dec 2023, 08:55 AM
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় আশু যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ। যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তোলা এক প্রস্তাবের পক্ষে এক তৃতীয়াংশ সদস্য রাষ্ট্র সমর্থন জানিয়েছে।
গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েল ক্রমাগত কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার মুখে পড়ছে, মঙ্গলবারের এ ভোটে এমনটিই দৃশ্যমান হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র ইসরায়েলকে বলেছেন, গাজার বেসামরিকদের ওপর তাদের ‘নির্বিচার’ বোমাবর্ষণের কারণে আন্তর্জাতিক সমর্থন হারাচ্ছে তেল আবিব।
সাধারণ পরিষদে ১২ ডিসেম্বরের ওই ভোটের আগে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা গাজার মানবিক সংকটের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ ও সতর্কতা জানান।
যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের নেতারা পৃথকভাবে বলেন, “হামাসকে পরাজিত করার মূল্য সব ফিলিস্তিনি বেসামরিকের ধারাবাহিক দুর্ভোগ হতে পারে না।”
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
রয়টার্স জানায়, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি তোলার পর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ১৫৩টি সদস্য রাষ্ট্র এর পক্ষে ভোট দেয়, ২৩টি রাষ্ট্র ভোটদানে বিরত থাকে আর ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০টি রাষ্ট্র বিপক্ষে ভোট দেয়। গাজায় যুদ্ধবিরতি শুধু হামাসকেই সুবিধা দেবে বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল, কিন্তু তাদের যুক্তি হালে পানি পায়নি।
যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব পাস হলেও এটি মানা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু এর রাজনৈতিক মূল্য আছে। এতে গাজায় চলামান যুদ্ধের ব্যাপারে বৈশ্বিক মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেছে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একই প্রস্তাব নিয়ে আরেকটি ভোট হয়েছিল। সেখানে পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ১৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল, ব্রিটেন ভোটদানে বিরত থাকে আর শুধু যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দেয়। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিটোর কারণে প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদে পাস হতে পারেনি। এই পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি পাস হলে ইসরায়েলকে তা বাধ্যতামূলকভাবে মানতে হতো।
নির্বাসনে থাকা হামাসের এক নেতা ইজ্জাত এল-রেশিক টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ইসরায়েলের অবশ্যই আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন, গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূলকরণ বন্ধ করতে হবে।”
হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়ে গাজায় যে সর্বাত্মক আক্রমণ চালাচ্ছে ইসরায়েল তাতে ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ১৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও প্রায় ৫০ হাজারের মতো আহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:
গাজায় এক-তৃতীয়াংশেরও কম হাসপাতাল সচল আছে: ডব্লিউএইচও
গাজায় ভেঙে পড়ছে শৃঙ্খলা, দলে দলে মানুষ মিশরমুখী হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে