অন্য দেশগুলোতে উচ্চহারের শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করলেও চীনের উপর শুল্ক আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
Published : 10 Apr 2025, 12:22 AM
কয়েক ডজন দেশে নতুন শুল্কারোপ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ব্যতিক্রম কেবল চীন।
অন্য দেশগুলোকে উচ্চহারের শুল্ক থেকে অপাতত স্বস্তি দিলেও চীনের উপর শুল্ক আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। তার ঘোষণা অনুযায়ী, চীনের পণ্যে শুল্ক বেড়ে দাঁড়াল ১২৫ শতাংশে। এ শুল্ক তাৎক্ষণিকভাবেই কার্যকর হবে।
ওদিকে, অন্যান্য দেশে ট্রাম্পের উচ্চহারের শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার মানে হচ্ছে, সেই দেশগুলোর পণ্যে এখন সার্বজনীন ভাবে প্রাথমিক ১০ শতাংশ শুল্কই বহাল থাকবে। হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট একথা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসান্ট নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, কানাডা এবং মেক্সিকোও এই ছাড়ের আওতায় আছে। এই দুটি দেশ তাদের কিছু পণ্যে ২৫ শতাংশ হারে শুল্কের মুখে ছিল। এখন শুল্ক প্রাথমিক সেই ১০ শতাংশেই থাকবে।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর পণ্যে শুল্কও এর আওতায় পড়বে কিনা তা স্পষ্ট করে জানান নি তিনি।
ট্রাম্পের শুল্ক সাময়িক স্থাগিতের ঘোষণার পরই চাঙ্গাভাব দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে। ন্যাসডাক সূচক ৯ শতাংশ এবং এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক বেড়েছে ৮ শতাংশ।
বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর সম্প্রতি ‘পারস্পরিক শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তালিকায় চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি ভারত এবং ইসরায়েলের মতো আমেরিকার বন্ধুরাষ্ট্রও ছিল।
হোয়াইট হাউজ থেকে গত সপ্তাহেই জানানো হয়, এই শুল্কনীতি নিয়ে অনেক দেশ ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছে এবং ৫০টিরও বেশি দেশ যোগাযোগ করেছে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসান্ট জানিয়েছেন, যে সব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে পাল্টা শুল্ক চাপায়নি, তাদের পুরষ্কৃত করা হবে।
হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেছেন,গত কয়েক দিনে যে দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে যোগাযোগ করেছে, আগামী ৯০ দিন সেই দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলবে।
চীন আগেই ট্রাম্পের শুল্ক তীরের কাছে মাথা নত না করে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এরপর থেকে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ কেবলই তীব্র হচ্ছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকেই চীনের পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। পরে বুধবার তা আরও ৩৪ শতাংশ বাড়ান ট্রাম্প। পাল্টা মার্কিন পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দেয় চীন। পরে ট্রাম্প আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বাড়ান চীনা পণ্যের উপর।
মোট শুল্ক বেড়ে হয় ১০৪ শতাংশ। ট্রাম্প ৫০ শতাংশ শুল্ক বাড়াতেই চীন ফের পাল্টা ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপায়। পরিস্থিতি দাঁড়ায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা পণ্যে ১০৪ শতাংশ শুল্ক বনাম চীনের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক।
দু’দেশের এই শুল্ক সংঘাতের মধ্যেই বুধবার চীনে শুল্ক শেষমেষ ১২৫ শতাংশে দাঁড়াল। ট্রাম্প বলছেন, চীন বিশ্ব বাজারের প্রতি কোনও সম্মান না দেখানোতেই তাদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।