গাজার ৩৬ টি হাসপাতালের মধ্যে সচল আছে ১১ টি। এগুলোতে কেবল আংশিক কাজ চলছে- বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তা।
Published : 12 Dec 2023, 10:15 PM
গাজায় ইসরায়েলের অবিরাম বোমা হামলা চলছে। দক্ষিণের খান ইউনিসেই মূলত চলছে অভিযান। গাজার সঙ্গেকার মিশরীয় সীমান্তের কাছে রাফাহ শহরেও চলছে লড়াই। এ পরিস্থিতির মধ্যে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্দশা তুলে ধরেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সংস্থাটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাত্র ৬৬ দিনেই গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়েছে। ৩৬ টি হাসপাতালের মধ্যে সচল আছে মাত্র ১১ টি। এই হাসপাতালগুলোতে কেবল আংশিক কাজ চলছে।
ডব্লিউএইচও’র এক প্রতিনিধি বলেন, গাজার হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো দরকার এবং কার্যক্রম আবার পুরোপুরি সচল হওয়া দরকার। কিন্তু বর্তমানে হাসপাতালগুলোর অবস্থা দেখে তিনি উদ্বিগ্ন।
গাজায় হামলায় বেসামরিক নাগরিক হতাহতের সংখ্যা সীমিত রাখতে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে হতাহতের ঘটনা বেড়েই চলেছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিমতীরের জেনিনে ৬ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জনই মারা গেছে ড্রোন হামলায়।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বলছে, জেনিন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কেন্দ্র। তাদের মধ্যে আছে ইসলামিক জিহাদ আন্দোলনের জঙ্গিরাও।
ইসরায়েলের সেনারা জেনিনের সরকারি হাসপাতাল অবরুদ্ধ করে রেখেছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণেও ছোড়া হচ্ছে টিয়ার গ্যাস বোমা। ফলে, হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীরা কয়েকঘন্টা ধরে আহতদের কাছে যেতে পারছে না বলে এক ফোনকলে বিবিসি সাংবাদিকদের জানিয়েছে।
ইসরায়েলের টিয়ারগ্যাস বোমা হামলার কারণে হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সদেরও অনেকে শ্বাসকষ্টে ভুগছে। যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন সংবাদিক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্মীরা।
গাজার মানবিক পরিস্থিতিও অত্যন্ত খারাপ পর্যায়ে বলে সতর্ক করেছে ত্রাণ সংগঠনগুলো। প্রয়োজনীয় সাহায্য খুব কমই গাজায় পৌঁছচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
সম্প্রতি কয়েক দিনে গাজায় প্রয়োজনীয় ত্রাণের প্রায় ২০ শতাংশ প্রবেশ করেছে। তাও এর বেশিরভাগই বিতরণ করা যায়নি ইসরায়েলের বোমা হামলা চলার কারণে। ফিলিস্তিনিদের জন্য চিকিৎসা সাহায্য বিষয়ক সংগঠনের এক কর্মী বিবিসি-কে একথা জানান।
প্রধান প্রধান সড়কে চলাফেরায় কড়াকড়ি এবং তুমুল লড়াই চলার কারণে গাজার উত্তরেও প্রায় কোনওরকম সাহায্য পৌঁছচ্ছে না। গত ১ ডিসেম্বরে গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর থেকে অবিরাম লড়াইয়ে পরিস্থিতির এই গুরুতর অবনতি হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধের দুই মাস পূর্ণ হয়েছে। এখন যুদ্ধ তীব্রতম পর্বে প্রবেশ করেছে। ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ঘনবসতিপূর্ণ গাজার বিভিন্ন লক্ষ্যে অবিরাম বোমা হামলা চালাচ্ছে।