‘কম্প্যাক্ট অ্যারে’ রেডিও টেলিস্কোপের মাধ্যমে সাড়ে চারশ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তোলার পর সমন্বয় করা সবচেয়ে স্পর্শকাতর ও ঘন রেডিও সংকেতের ছবি এটি।
Published : 17 Jan 2024, 01:26 PM
প্রাচীন এক তারাগুচ্ছের রেডিও ইমেজ তৈরি করেছেন জোতির্বিদরা, যার কেন্দ্রে একটি রহস্যময় রেডিও সংকেতের খোঁজ মিলেছে।
নতুন এ ছবিটি রাতের আকাশে দেখতে পাওয়া দ্বিতীয় উজ্জ্বলতম গোলাকার তারাগুচ্ছ, যা ‘৪৭ টুকানাই’ নামে পরিচিত।
অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর রেডিও অ্যাস্ট্রনমি রিসার্চ (আইসিআরএআর)’-এর জোতির্বিদ ড. আরাশ বাহরামিয়ান ব্যাখ্যা করে বলেছেন, নক্ষত্রগুচ্ছ হল মহাবিশ্বের প্রথম দিকের এমন প্রাচীন নিদর্শন, ‘যেগুলো আমরা মিল্কি ওয়ে’র আশপাশে তারার বিশাল গোলক আকারে দেখতে পাই’।
“এদের ঘনত্ব অনেক বেশি। আর এমন একেকটি গোলকে কোটিরও বেশি নক্ষত্র থাকতে পারে।”
“আমরা ৪৭ টুকানাইয়ের যে ছবিটি বানিয়েছি, সেটি ছায়াপথের সবচেয়ে বড় গোলাকার তারাগুচ্ছগুলোর একটি। এতে ১০ লাখেরও বেশি নক্ষত্র রয়েছে, যেগুলোর উজ্জ্বলতা ও কেন্দ্রের ঘনত্বও অনেক বেশি।”
অস্ট্রেলীয় রেডিও টেলিস্কোপ ‘কম্প্যাক্ট অ্যারে’র মাধ্যমে এ ছবি তুলতে সময় লেগেছে সাড়ে চারশ ঘণ্টারও বেশি। আর টেলিস্কোপটির মাধ্যমে সমন্বয় করা সবচেয়ে স্পর্শকাতর ও ঘন রেডিও সংকেতের ছবিও এটি।
বিভিন্ন গ্রহ বা নক্ষত্রের মতো মহাকাশীয় বস্তু থেকে রেডিও তরঙ্গ প্রবাহিত হয়, যেগুলো মহাকাশে আলোক রশ্মির মতোই চলাফেরা করতে সক্ষম। আর রেডিও টেলিস্কোপের কাজ হল, এ ধরনের রেডিও তরঙ্গ শনাক্ত করা।
পরবর্তীতে এমন রেডিও সংকেত সমন্বয় করে ছবিতে রূপান্তর করে থাকেন জোতির্বিদরা।
৪৭ টুকানাইয়ের প্রথম নমুনা তৈরি হয়েছিল ১৭০০’র দশকে। এমনকি খালি চোখেও দেখা যায় এটি।
রহস্যময় রেডিও সংকেতের সম্ভাব্য দুটি কারণ
তারাগুচ্ছটিকে আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখলে ইঙ্গিত মেলে, এর আগে যে সংকেতগুলো শনাক্ত হয়নি, সেগুলো আসছে এর কেন্দ্র থেকে।
গবেষণার মূল লেখক ড. অ্যালেসান্দ্রো পাদুয়ানোর মতে, এমন সংকেতের পেছনে সম্ভাব্য দুটি কারণ রয়েছে।
প্রথমটি হল, ওই তারাগুচ্ছে একটি কৃষ্ণগহ্বর বা ‘ব্ল্যাক হোল’ রয়েছে, যা নিজেই একটি যুগান্তকারী অনুসন্ধান হতে পারে। আর দ্বিতীয়টি হল, এতে একটি ‘পালসার’ শ্রেণীর ঘুর্ণায়মান নক্ষত্র আছে, যেখান থেকে রেডিও সংকেত বের হয়।
“নক্ষত্রগুচ্ছের কেন্দ্রে পালসার শ্রেণির তারা থাকার বিষয়টিও বৈজ্ঞানিকভাবে চমকপ্রদ এক অনুসন্ধান। কারণ এটি এমন এক কেন্দ্রীয় কৃষ্ণগহ্বরের খোঁজ দিতে পারে, যা এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।” --বলেন ড. পাদুয়ানো।