কম্পিউটার চিপ তৈরির সরঞ্জাম রপ্তানিতে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান। এর আগে একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডস।
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে ব্যবহার হয় এমন ২৩ ধরনের সরঞ্জাম।
মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে সামরিক হার্ডওয়্যারের মূল চালিকাশক্তি সেমিকন্ডাক্টরের অবস্থান এখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে তৈরি হওয়া তিক্ত সম্পর্কের কেন্দ্রে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
ওয়াশিংটনের আরোপ করা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের বিপরীতে চীন ক্রমাগতই যুক্তরাষ্ট্রকে ‘প্রযুক্তি কর্তৃত্ববাদী’ বলে আখ্যা দিয়ে আসছে।
তবে, শুক্রবার জাপানের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে চীন বা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততার উল্লেখ ছিল না।
“একটি প্রযুক্তিগত দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখতে আমরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।” --বলেছে মন্ত্রণালয়।
বিবিসি বলছে, এই নীতিমালা বাস্তবায়নে দেশটির জনগণের মতামত লাগবে। আর এটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে জুলাইয়ে।
জাপানের বাণিজ্য মন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা বলেন, এই পদক্ষেপের সঙ্গে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোনো সম্পর্ক নেই।
“আমাদের রপ্তানি করা পণ্য সামরিক কাজে ব্যবহৃত না হলে আমরা সেটি আটকাব না। আশা করছি, বিভিন্ন কোম্পানির ওপর এর প্রভাব সীমিত হবে।” --যোগ করেন নিশিমুরা।
সপ্তাহান্তে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশির বেইজিং ভ্রমণের ঠিক আগেই এই ঘোষণা এলো।
হায়াশি বলেন, দেশটির সঙ্গে ‘গঠনমূলক ও স্থিতিশীল সম্পর্ক তৈরির জন্য’ তিনি চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিং গাংয়ের সঙ্গে ‘সৎ ও খোলামেলা আলোচনা’ করবেন।
জাপানের এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে টোকিও ইলেকট্রন ও নিকন’সহ বেশ কয়েকটি শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানির সরঞ্জাম।
আর এর প্রভাব গিয়ে পড়বে সিলিকন ওয়েফার পরিষ্কারে ব্যবহৃত সরঞ্জাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন লিথোগ্রাফি মেশিনের ওপর।
মাইক্রোচিপ তৈরির অংশ হিসেবে লিথিগ্রাফি মেশিন বিভিন্ন লেজার ব্যবহার করে সিলিকনে বিভিন্ন সুক্ষ্ণ সার্কিট প্রিন্ট করে।
অক্টোবরে ওয়াশিংটন থেকে ঘোষণা আসে, মার্কিন সরঞ্জাম বা সফটওয়্যার ব্যবহার করে চীনে চিপ রপ্তানি করতে গেলে উৎপাদকদের লাইসেন্স প্রয়োজন পড়বে, সেগুলো বিশ্বের যেখানেই তৈরি হোক না কেন।
সে সময়, জাপান ও নেদারল্যান্ডসকেও একই পদক্ষেপ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।