স্ট্রোক ও প্যারালাইসিসে যেসব রোগী মৌখিক বা শারীরিকভাবে যোগাযোগের সক্ষমতা হারিয়েছেন তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে প্রযুক্তিটি।
Published : 03 May 2023, 04:05 PM
ননইনভেসিভ পদ্ধতিতে (মস্তিস্কে কোন চিপ বসানো ছাড়াই) মানুষের ভাবনাকে একটানা লেখায় প্রকাশে সক্ষম- এমন এআই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকরা পদ্ধতিটির নাম দিয়েছেন সিমেনটিক ডিকোডার। তারা বলছেন, স্ট্রোক ও প্যারালাইসিসে যেসব রোগী মৌখিক/শারীরিকভাবে যোগাযোগের সক্ষমতা হারিয়েছেন তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে প্রযুক্তিটি।
মাইক্রোসফটের চ্যাটজিপিটি ও গুগুলের বার্ডের মত ট্রান্সফর্মার মডেল ব্যবহার করে ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস অ্যাট অস্টিনে’র গবেষকরা এই প্রযুক্তিটি নির্মাণের কথা উল্লেখ করেছেন নেচার নিউরোসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা এফএমআরআই মেশিনের কয়েক ঘণ্টার পডকাস্ট শুনে শুনে এই এআই প্রযুক্তিটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। কোনো অস্ত্রোপাচার ছাড়াই মানুষের মস্তিস্কের ভেতরে পর্যবেক্ষণ চালাতে পারে এফএমআরআই মেশিন।
কোনো গল্প শোনার পর বা কোন কিছু কল্পনা করার পর যেসব ভাবনা মনে খেলা করে সে সবকে একটানা লেখায় প্রকাশ করতে পারবে এই এআই প্রযুক্তিটি। তবে, সেটি সম্ভব হবে এটি পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়ার পর।
গবেষকরা বলছেন এই প্রযুক্তি হুবহু অনুলিখন করবে না, বরং অংশ নেওয়া ব্যাক্তির চিন্তার সাধারণ রূপ প্রকাশের চেষ্টা করবে।
গবেষকদের দাবি অনুসারে বর্তমানে প্রয়োগ চলাকালে অংশগ্রহনকারী ব্যাক্তি আসলে যা বলতে চেয়েছিলেন, অর্ধেক সংখ্যক বারই সেটি ঠিকঠাক ভাবে লিখে ফেলতে পারবে।
উদাহারণ হিসাবে, পরীক্ষা চলাকালে একজন অংশগ্রহণকারী শোনেন কেউ বলছেন, “আমি এখনও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাইনি”। এটি শোনার সময় তার যে ভাবনা প্রযুক্তিটি প্রকাশ করেছে সেটি হচ্ছে- “সে এখনও ড্রাইভিং শেখা শুরুই করেনি।”
গবেষকদলের অন্যতম প্রধান আলেকজেন্ডার হুথ বলছেন, “ননইনভেসিভ ঘরানায় এতদূর অগ্রগতি সত্যিই যুগান্তকারী, আগে এক দুটো ছাড়া ছাড়া শব্দ উদ্ধার করা যেত বড়জোর”। তিনি আরও বলেন, আমরা একটানা ভাবনাকে লেখায় রূপান্তর কারার মডেলকে বহুঅর্থবোধক জটিল অংশগুলোসহ আরো ভালোভাবে বুঝতে পারছি।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের স্ক্যানিং চালাকালে শব্দহীন চারটি ভিডিও দেখতে বলা হয়। ভিডিওর উল্লেখযোগ্য অংশের পাঠোদ্ধার করতে সক্ষম হয় এআই মাধ্যমটি।
এখন পর্যন্ত এফএমআরাই যন্ত্রনির্ভর এই সিমেনটিক ডিকোডার যন্ত্রটি ল্যাবরোটরির বাইরে ব্যবহার করা না গেলেও এর উদ্ভাবকরা আশা করছেন সামনে এটি আরো বহনযোগ্য আকারে তৈরি করা যাবে।
এই গবেষণার দলনেতারা প্রযুক্তিটির জন্য একটি পিসিটি পেটেন্ট আবেদন করেছেন।