এআইয়ের সাহায্যে ‘নতুন এক উপাদান পাওয়ার এক অভুতপূর্ব সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, যা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজগুলোর হয়তো সহজ সমাধান দেবে।
Published : 30 Apr 2024, 02:14 PM
গাছের চেয়েও দ্রুত গ্রিনহাউস গ্যাস সংরক্ষণ করতে পারে, সম্প্রতি এমন এক ফাঁপা উপাদান তৈরির দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
নতুন আবিষ্কৃত উপাদানটি ফাঁপা খাঁচার মতো অণু দিয়ে তৈরি, যা কার্বন ডাই অক্সাইড ও সালফার হেক্সাফ্লোরাইডের মতো গ্রিনহাউস গ্যাস ধারণ করে রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন। অসম্ভব শক্তিশালী সালফার হেক্সাফ্লোরাইড বায়ুমণ্ডলে হাজার হাজার বছর টিকে থাকতে পারে।
গবেষণায় যৌথভাবে নেতৃত্ব দেওয়া স্কটল্যান্ডের ‘হেরিওট-ওয়াট ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাপক ড. মার্ক লিটল বলেছেন, ‘আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সহায়ক হতে পারে’ এ আবিষ্কারটি।
“সরাসরি বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড সংগ্রহের গুরুত্ব ক্রমেই বাড়ছে। কারণ, আমরা কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ বন্ধ করলেও পরিবেশে এরইমধ্যে নির্গমন করা আগের কার্বন ডাই অক্সাইড সংগ্রহের ক্ষেত্রে উপাদানটি অনেক প্রয়োজনীয়।”
“বাতাস থেকে কার্বন শোষণের খুবই কার্যকর উপায় হচ্ছে বৃক্ষ রোপণ, তবে তা খুবই ধীরগতির প্রক্রিয়া। তাই পরিবেশ থেকে আরও দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে গ্রিনহাউজ গ্যাস সংগ্রহের জন্য মানুষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, মানুষের তৈরি করা অণু।”
বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল গ্রিনহাউস গ্যাস।
নতুন আবিষ্কারটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে তাপ আটকে রেখে গ্রিনহাউসের দেয়ালের মতো কাজ করে। এক্ষেত্রে কার্বন ডাই অক্সাইড প্রাকৃতিক উপায়ে নির্গত হলেও সালফার হেক্সাফ্লোরাইড এমন এক মানবসৃষ্ট গ্যাস, যা খুব কার্যকরভাবে তাপ আটকাতে সক্ষম।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা
গবেষকরা বিভিন্ন কম্পিউটার সিমুলেশন ব্যবহার করে নির্ভুলভাবে অনুমান করার চেষ্টা করেছেন, কীভাবে বিভিন্ন অণু নতুন উপাদানে নিজেদের সমন্বিত করবে। এ বিষয়ে ড. লিটল বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় ভবিষ্যতে এ নতুন উপাদানটিকে আরও উন্নত করা যেতে পারে।
তিনি আরও যোগ করেন, এআইয়ের সাহায্যে ‘নতুন এক উপাদান পাওয়ার এক অভুতপূর্ব সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, যা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজগুলোর হয়তো সহজ সমাধান দেবে। আর এগুলোর জন্য গবেষণাগারেরও বাধ্যবাধকতাও নেই।
এ গবেষণাটিকে অন্যান্য উপাদানের বিকাশের ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন ড. লিটল। তিনি আরও বলেছেন, জটিল কাঠামোওয়ালা বিভিন্ন অণু বাতাস থেকে নানা বিষাক্ত যৌগ, বিশেষ করে উদ্বায়ী জৈব যৌগ অপসারণে ব্যবহার করা যেতে পারে। এমনকি চিকিৎসাবিজ্ঞানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এটি।
‘হেরিওট-ওয়াট ইউনিভার্সিটি’র বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি এ গবেষণার পেছনে কাজ করেছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ লিভারপুল’, ‘ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন’, ‘ইউনিভার্সিটি অফ সাউদাম্পটন’ ও ‘ইস্ট চায়না ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’।
গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার সিন্থেসিস’-এ।