২০৩৩ সাল নাগাদ পৃথিবীতে ফিরতে পারে মঙ্গলের জৈব অণুর নমুনাবাহী রকেট।
Published : 16 Sep 2022, 07:05 PM
সৌরজগতের লাল গ্রহ মঙ্গলের ওয়াইল্ডক্যাট শৈলশিরা থেকে জৈব পদার্থের নমুনা সংগ্রহ করেছে নাসার রোভার পারসিভের্যান্স।এখন অপেক্ষা ওই নমুনা পৃথিবীর ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখার।
মঙ্গলে অবতরণের পর গত দেড় বছরে পারসিভের্যান্সের এ অর্জন নিয়ে নাসার বিজ্ঞানীরা উচ্ছ্বসিত বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট। পাথরের নমুনা থেকে শুরু করে জৈব পদার্থ খুঁজে বের করে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মাতিয়ে রেখেছে এ রোবট যান।
ওয়াইল্ডক্যাট শৈলশিরায় জৈব অণু
নাসার বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে জেজেরো জ্বালামুখ অঞ্চলের ওয়াইল্ডক্যাট শৈলশিরা। সেখান থেকে দুটি নমুনা সংগ্রহ করেছে পারসিভের্যান্স।
ওই নমুনার জৈব অণু নিয়েই সবচেয়ে বেশি আগ্রহী নাসা; বিজ্ঞানীরা বলছেন, মঙ্গলের অতীত জৈব জীবনের প্রমাণ হতে পারে এটি, আবার জীবনের অনুপস্থিতিতেও তা গঠন হতে পারে।
জৈব অণুর অস্তিত্ব মানেই যে আদি প্রাণের প্রমাণ নয়, তার ওপর বারবার জোর দিয়েছেন পারসিভের্যান্সের গবেষকরা। এর আগেও গেইল গিরিখাদে জৈব অণু চিহ্নিত করেছিল নাসার রোবাভার কিউরিওসিটি। মিশনের প্রথম দিকে কার্বনবাহী অণুর সন্ধান পেয়েছিল পারসিভের্যান্স নিজেও।
ওয়াইল্ডক্যাটে জৈব অণু চিহ্নিত করেছে পারসিভ্যারেন্সের যন্ত্রাংশ শার্লক (স্ক্যানিং হ্যাবিটেবল এনভায়রনমেন্টস উইথ রামান অ্যান্ড লুমিনেসেন্স ফর অর্গানিক অ্যান্ড কেমিক্যালস-এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে শার্লক)। নাসা বলছে, ওই শৈলশিরায় পাওয়া নমুনা বিশ্লেষণ করে মিশনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি জৈব অণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
পারসিভের্যান্স প্রকল্পের বিজ্ঞানী কেন ফার্লি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পাথরে জৈব অণুর উপস্থিতি পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ কারণ, পৃথিবীতেও একই ধরনের পাথরে প্রাচীন জীবের ফসিল পাওয়ার নজির আছে।
লাল গ্রহ মঙ্গলে কখনও প্রাণ তৈরি হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করার সক্ষমতা পারসিভের্যান্সের নেই। সে কারণে মঙ্গলে পাওয়া পাথরের নমুনাগুলো পৃথিবীতে এনে পরীক্ষা করে দেখা গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন ফার্লি।
নমুনা আনতে উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনা
সবমিলিয়ে পারসিভের্যান্স এখন ১২টি নমুনা বহন করছে বলে জানিয়েছে সিনেট। নমুনাগুলো পৃথিবীতে আনতে উচ্চভিলাসী এক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। প্রয়োজনে কম গুরুত্বপূর্ণ কিছু নমুনা ফেলে দিতেও তারা রাজি।
এ পরিকল্পনার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্স স্যাম্পল রিটার্ন (এমএসআর)’ প্রকল্প। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলে নতুন একটি ল্যান্ডার পাঠাতে চায় নাসা, যা পারসিভের্যান্সের কাছ থেকে নমুনার টেস্টটিউবগুলো সংগ্রহ করবে; তারপর রকেটে চড়ে পৃথিবীতে ফিরবে।
প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পরিকল্পনার পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছে সিনেট। সবে সব ঠিক থাকলে মঙ্গলের জৈব অণুর নমুনাবাহী রকেট পৃথিবীতে ফেরার জন্য ২০৩৩ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।