Published : 26 May 2024, 02:42 PM
প্রথম দিকে নাসা’র পাঠানো বিভিন্ন রোভার যখন মঙ্গলের ভুত্বকের অনুর্বর ও কঠিন ল্যান্ডস্কেপের নানা ছবি পৃথিবীতে পাঠিয়েছিল তখন অনেকেই ধারণা করেছিলেন, আর বোধহয় গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেল না!
তবে, আশা ছাড়েননি বিজ্ঞানীরা। তারা মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে দেখার কাজটি চালিয়ে যান এ আবিষ্কারের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে যে, পৃথিবীতে চরম পরিস্থিতিতেও প্রাণ টিকে থাকতে পারে।
এ চলমান গবেষণা বহির্জাগতিক জীবন দেখতে কেমন হতে পারে ও এর অবস্থান কোথায় সে সম্পর্কে আমাদের বোঝার বিষয়কে প্রসারিত করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে নোরিজ।
সাম্প্রতিক সময়ে নাসা’র বিভিন্ন মিশনে মঙ্গল গ্রহে প্রচুর পরিমাণে ‘পার্ক্লোরেট’ লবণের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। এইসব লবণ বায়ুমণ্ডল থেকে পানি শোষণ করতে পারে, যা থেকে তৈরি হয় ‘ব্রাইন’ নামে পরিচিত ঘনীভূত দ্রবণ।
তরল পানি প্রাণের জন্য অপরিহার্য হওয়ায় মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র কৌশল হল ‘পানিকে অনুসরণ করা’। তাই এইসব পার্ক্লোরেট ব্রাইনের প্রতি গভীর মনোযোগ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার কমিউনিকেশনস’-এ প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় ‘কলেজ অফ বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস’-এর গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন, কীভাবে মঙ্গলের অনন্য ভূ-রাসায়নিক পরিবেশ অতীতে বা বর্তমানে প্রাণসঞ্চারে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘কলেজ অফ বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস’-এর সহকারী অধ্যাপক অ্যারন এঙ্গেলহার্টের নেতৃত্বে গবেষণা দলটি বিভিন্ন পার্ক্লোরেট ব্রাইন কীভাবে কাজ করে তা দেখতে পৃথিবী থেকে দুই ধরনের রাইবোনিউক্লিয়িক অ্যাসিড বা আরএনএ ও প্রোটিন এনজাইম পরীক্ষা করেছেন।
গবেষকদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে
“এইসব ফলাফল থেকে ইঙ্গিত মেলে, আরএনএ মঙ্গল গ্রহে পাওয়া খুব লবণাক্ত পরিবেশের জন্য ভালভাবে উপযুক্ত ও অন্যান্য মহাকাশীয় বস্তুতে এর উপস্থিতি থাকতে পারে,” বলেছেন এঙ্গেলহার্ট।
“অতীতে মঙ্গল গ্রহে কীভাবে প্রাণের সঞ্চার করতে পারে বা গ্রহটির বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে এটি তৈরি হতে পারে সে বিষয়টিকে প্রভাবিত করতে পারে লবণের এই চরম সহনশীলতা।”
গবেষণা দলটি তাদের আবিষ্কৃত ‘ক্লোরিনেশন রসায়ন’-এর অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। সেইসঙ্গে অন্যান্য বিক্রিয়া, যা আরএনএ-এর উচ্চমাত্রার লবণের পরিবেশে তৈরি করতে পারে সে বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।
এ গবেষণাটি কেবল মঙ্গলে প্রাণের সম্ভাবনার উপরই আলোকপাত করে না বরং চরম পরিস্থিতিতে প্রাণের অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতা সম্পর্কে আমাদের বোঝার বিষয়টিকেও প্রসারিত করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে নোরিজ।