বিভিন্ন ভয়েস ক্লিপের অডিও বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে থাইয়ের ‘ওল্ড স্কুল’ শব্দটি বলার ধরন একই রকম শোনাচ্ছিল।
Published : 27 Apr 2025, 07:06 PM
গত ছয় মাস ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইনির্ভর হোস্ট ব্যবহার করে তা গোপন রাখার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার এক রেডিও স্টেশন।
অস্ট্রেলিয়ান রেডিও নেটওয়ার্ক স্টেশন ‘সিএডিএ’ সিডনিতে সম্প্রচারিত হওয়ার পাশাপাশি ‘আইহার্টরেডিও অ্যাপ’-এও সম্প্রচারিত হয়, যেখানে স্টেশনটি ভয়েস ক্লোনিং কোম্পানি ‘ইলাভেনল্যাবস’-এর মাধ্যমে বিকাশ করা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই সফটওয়্যার ব্যবহার করে ‘থাই’ নামে এক হোস্ট তৈরি করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
তাদের ‘ওয়ার্কডেইজ উইথ থাই’ অনুষ্ঠানে সোমবার থেকে শুক্রবার চার ঘণ্টা করে সংগীত পরিবেশন করত স্টেশনটি। তবে তারা তাদের ওয়েবসাইট বা প্রচারণায় কখনোই উল্লেখ করেনি যে, থাই সত্যিকারের বা আসল ব্যক্তি কি না।
সিএডিএ-এর অনুষ্ঠানের পেইজে বলা হয়েছে, “যদি দিনটি তোমার কাছে একটু বেশিই বিষণ্ণ মনে হয় তাহলে থাই ও সিএডিএ-কে তোমার মেজাজকে প্রাণবন্ত করতে কাজে লাগাতে পারো।”
এদিকে, থাই সত্যিকারের ব্যক্তি কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সিডনিভিত্তিক লেখক স্টেফানি কুম্বস। এরপরই এর আসল পরিচয় বেরিয়ে আসে।
এ মাসের শুরুতে এক ব্লগ পোস্টে কুম্বস লিখেছেন, “থাইয়ের নামের শেষ অংশ কী? সে কে? তিনি কোথা থেকে এলেন? যে নারী ওই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করছেন বলে মনে করা হচ্ছে, তার কোনও জীবনী বা তার সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই।”
এর বিভিন্ন ভয়েস ক্লিপের অডিও বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে থাইয়ের ‘ওল্ড স্কুল’ শব্দটি বলার ধরন একই রকম শোনাচ্ছিল।
‘অ্যাকুয়ারার রেফারেন্স নম্বর’ বা এআরএন প্রকল্পের নেতা ফায়েদ তোহমে পরবর্তীকালে থাইয়ের কণ্ঠস্বর তৈরিতে এআই ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছেন এবং লিংকডইন পোস্টে লিখেছেন, থাইয়ের কণ্ঠস্বর ‘বাস্তব শোনাচ্ছে’ এবং সত্যিকারের ব্যক্তি না হলেও সত্যিকারের ভক্ত রয়েছে তার।
পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, “কোনও মাইক নেই, কোনও স্টুডিও নেই, কেবল কোড ও ভাইবস রয়েছে”। তার এমন পোস্ট শেয়ার করেছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘মিডিয়াউইক’।
অস্ট্রেলিয়ান কমিউনিকেশনস অ্যান্ড মিডিয়া অথরিটি’ বলেছে, সম্প্রচার কনটেন্টে এআই ব্যবহারের বিরুদ্ধে বর্তমানে দেশটিতে কোনও আইন নেই।
তবে নিজেদের নিয়মিত এক অনুষ্ঠানে এআই ব্যবহারের কথা প্রকাশ না করার জন্য সমালোচিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার রেডিও নেটওয়ার্কটি।
‘অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ ভয়েস অ্যাক্টর্স-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট টেরিজা লিম মিডিয়াউইককে বলেছেন, “রেডিও উপস্থাপক যে এআই তা প্রকাশ করে তাদের স্পষ্ট ও সৎ হওয়া উচিত ছিল।”
“কোনো এআই লেবেলিং না থাকার কারণে মানুষেরা এটিকে সত্যিকারের ব্যক্তি ভেবে প্রতারিত হয়েছেন।”
এআরএন এক বিবৃতিতে বলেছে, “নতুন প্রযুক্তি কীভাবে দারুণ কনটেন্টকে সমর্থন করতে পারে এবং এর আউটপুট উন্নত করতে পারে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা এআরএন দলের সদস্য থাইয়ের কণ্ঠ ব্যবহার করে সিএডিএ-তে এআই অডিও টুলটি নিয়ে পরীক্ষা করছি।”