“আমাদের সাথে চায়না কমিউনিস্ট পার্টি বা গভর্নমেন্ট এর খুব বেশি ইন্টার্যাকশন ছিল না। কিন্তু এখন ব্যাপকভাবে ইন্টার্যাকশন হচ্ছে এবং অনেক দ্রুততার সাথে রিলেশন হচ্ছে,” বলেন জামায়াতের নায়েবে আমীর।
Published : 28 Apr 2025, 01:03 AM
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করেছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধি দল।
রোববার বিকালে গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে ঢাকা সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাউথ এশিয়া রিজিওনের ডিরেক্টর জেনারেল পেং জিউবিন এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে।
জামায়াতের নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের নেতৃত্বে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের বলেন, “চায়না কমিউনিস্ট পার্টির সাথে অনেক খোলামেলা আলোচনা করেছি এবং কতিপয় বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে যে ইন্টারেস্ট আছে, সেগুলোর বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।”
তিনি বলেন, তিস্তা ব্যারেজ, দ্বিতীয় পদ্মা ব্রিজ, ব্লু ইকোনমি, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, শিক্ষা বৃত্তির মত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আবদুল্লাহ তাহের বলেন, “এই অঞ্চলে যাতে কেউ কারো প্রতি রক্তচক্ষু দেখাতে না পারে এজন্য ব্যালেন্স অব সিকিউরিটি ইস্যুজ এর ব্যাপারে আমরা তাদের সাথে মতবিনিময় করেছি।
“আপনারা জানেন চায়না কমিউনিস্ট পার্টি এবং গভর্নমেন্ট বলতে গেলে একই সত্তা। সুতরা আমরা আশা করি চায়নার সাথে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট, জামায়াতে ইসলামী টু গভর্নমেন্ট, পিপলস টু পিপলস, পার্টি টু পার্টির যে রিলেশন, সেটা আরও বৃদ্ধি পাবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের সাথে চায়না কমিউনিস্ট পার্টি বা গভর্নমেন্ট এর খুব বেশি ইন্টার্যাকশন ছিল না। কিন্তু এখন ব্যাপকভাবে ইন্টার্যাকশন হচ্ছে এবং অনেক দ্রুততার সাথে রিলেশন হচ্ছে।”
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও বৈঠকে কথা হয়েছে জানিয়ে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, “আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশে ১১ বা ১২ লাখ রোহিঙ্গা আছে; তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমরা বলেছি, ফুড, ক্লোদিং এবং শেল্টার এটা কোনো সমাধান নয়। সমাধান হচ্ছে রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসন করা।
“সেজন্য আমরা একটি প্রস্তাবও দিয়েছি। সেটা হচ্ছে আরাকান কেন্দ্রিক রোহিঙ্গাদের যে মেজরিটি আছে, সে এরিয়াতে একটি ইন্ডিপেনডেন্ট আরাকান স্টেট করার প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। চায়না এখানে সবচাইতে বেশি ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ মিয়ানমারের সাথে চায়নার বড় ধরনের রিলেশনশিপ আছে। তারা আমাদের এই নিউ প্রোপোজাল সম্পর্কে তাদের গভর্নমেন্টকে বলবে এবং উদ্যোগ গ্রহণ করার ব্যাপারে তারা চেষ্টা করবে।”
চীনা প্রতিনিধি দল নির্বাচন নিয়ে জানতে চেয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে তথ্য দেন জামায়াতের নায়েবে আমীর।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের সময়ের ব্যাপারে তারা জানতে চেয়েছে; নির্বাচন কখন হতে পারে, কীভাবে হতে পারে। আমরা বলেছি যে, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা তো একটা লাইন দিয়েছেন যে, ডিসেম্বরে হতে পারে; বেশি সংস্কার চাইলে জুনে হতে পারে। আমরা বলেছি আমরা এই প্রোপজালের সাথে একমত।
“নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের স্পেসিফিক কোনো কিছু নেই। এবং তারা এটা বলেছে খুব স্পষ্ট করে যে ‘আমরা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। বাংলাদেশের বিষয়েও আমরা কোনো ধরনের হস্তক্ষেপে বিশ্বাস করি না। আমাদের কাজ হচ্ছে আপনাদের পলিসি এবং প্রোগ্রামকে সহযোগিতা করা।’ তারা কোনো ইন্টারফেয়ার করতে চায় না। এগুলো তারা ক্লিয়ারলি উচ্চারণ করেছেন।”