যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশই ব্যয়বহুল ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ না করে বিপুল সংখ্যক ড্রোনকে পরাস্ত করার জন্য নতুন যন্ত্রপাতির সন্ধানে রয়েছে।
Published : 26 Dec 2024, 03:25 PM
ড্রোনের ঝাঁককে সাশ্রয়ী মূল্যে পরাস্ত করার লক্ষ্যে ডিজাইন করা এক নতুন অস্ত্রের প্রথম সফল ও লাইভ-ফায়ার পরীক্ষা চালিয়েছে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ওয়েস্ট ওয়েলসের এক আকাশ সীমায় ‘রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডাইরেক্টেড এনার্জি ওয়েপন’ নামের নতুন ওই অস্ত্র দিয়ে ড্রোন চালিয়ে ‘সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে’ দেশটির সামরিক বাহিনীর ‘রয়্যাল আর্টিলারি ট্রায়ালস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইউনিট’ ও ‘সেভেন এয়ার ডিফেন্স গ্রুপ’।
“সেনাবাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা কর্মীদের বিভিন্ন পরিসরের পরিবেশ, হুমকির ধরন ও যুদ্ধের মতো পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সক্ষমতার সম্ভাবনা খুঁজে দেখতে ও তা চর্চা করতে সাহায্য করেছে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শেষ হওয়া পরীক্ষামূলক বিভিন্ন অনুশীলন।”
যুক্তরাজ্যে এমন সময়ে এ পরীক্ষা চালালো যখন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ ব্যয়বহুল ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ না করে বিপুল সংখ্যক ড্রোনকে পরাস্ত করার জন্য নতুন যন্ত্রপাতির সন্ধানে রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে মার্কিন সামরিক সংবাদ সংস্থা ডিফেন্স স্কুপ।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা এমন এক ভবিষ্যত মুখী অস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে, যা রেডিও তরঙ্গ ছাড়া আর কিছু ব্যবহার না করেই ড্রোনকে ভূপাতিত করতে সক্ষম। বিশেষ করে এই ড্রোনের প্রতিটি ‘শট’ এর দাম এক স্লাইস পাইয়ের চেয়েও কম। প্রতি শটে খরচ হবে প্রায় ১৩ সেন্ট। প্রকল্পটির কার্যক্রম বেশ কিছুদিন ধরে চললেও এই প্রথম ব্রিটিশ সৈন্যরা এর ক্ষমতা পরীক্ষা করার সুযোগ পেল।
ড্রোনটি বানিয়েছে ফ্রান্সের মহাকাশ, যোগাযোগ ও ন্যাভিগেশন কোম্পানি ‘থ্যালেস গ্রুপ’-এর নেতৃত্বাধীন এক কনসোর্টিয়াম, যার মধ্যে রয়েছে ‘কিনেটিকিউ’, ‘টেলিডাইন ই২ভি’ ও ‘হোরিবা মিরা’র মতো বিভিন্ন কোম্পানি যারা যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘ডিফেন্স ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট অর্গানাইজেশন’ ও ‘ডিফেন্স সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ল্যাবরেটরি’র চুক্তি পেয়েছিল দলটি।
বিভিন্ন ধরনের লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত, ট্র্যাক ও আক্রমণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে ড্রোন অস্ত্রের সিস্টেমটিকে। একইসঙ্গে এক কিলোমিটার দূর পর্যন্তও লক্ষ্যবস্তু শনাক্তের সক্ষমতা রয়েছে এদের।
“উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির তরঙ্গ ব্যবহার করে ড্রোনের মতো ডিভাইসের ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক উপাদানের ক্ষতি করতে পারে এ ক্ষেপণাস্ত্র। যার ফলে সেগুলো অকার্যকর হয়ে ভূপাতিত হয়,” বিবৃতিতে বলেছে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ প্রযুক্তিটি ভূমি ও সমুদ্রের মতো অন্যান্য যুদ্ধক্ষেত্রের হুমকির বিরুদ্ধেও ব্যবহার করা যেতে পারে বলে দাবি মন্ত্রণালয়ের।