গ্রহটির পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৪৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের তুলনায় এর পৃষ্ঠের চাপ ৯০ গুণ বেশি।
Published : 03 Dec 2024, 03:06 PM
শুক্র গ্রহের পৃষ্ঠে হয়ত কখনোই মহাসাগরের অস্তিত্ব ছিল না, এমনই উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়।
শুক্রের ইতিহাস ও এটি কখনও তরল মহাসাগর ধারণ করেছিল কি না, তা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বৈজ্ঞানিক বিতর্ক চলমান থাকলেও ‘ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজ’-এর জ্যোতিরসায়নবিদদের নতুন এক গবেষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে, এটি সবসময়ই শুষ্ক অবস্থায় ছিল।
“শুক্রে পানির অস্তিত্ব নিয়ে প্রস্তাবিত দুটি ইতিহাস একেবারেই আলাদা। এর একটি হল, গ্রহটির পৃষ্ঠে তরল পানি থাকার পাশাপাশি বেশ কয়েকশ কোটি বছর এর জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ ছিল। আর অন্যটি হল, শুরু থেকেই গ্রহটি এতটাই গরম ছিল, যে এর পৃষ্ঠে কখনও তরল পানি জমার সুযোগ তৈরি হয়নি,” বলেছেন, এ গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক তেরেজা কনস্টান্টিনো, অলিভার শর্টল এবং পল বি রিমার।
কনস্টান্টিনো ও তার সহকর্মীরা শুক্রের বর্তমান বায়ুমণ্ডলের মডেল তৈরি করে খুঁজে পেয়েছেন, ‘এটি কখনোই পানির অস্তিত্ব থাকার মতো গ্রহ ছিল না।”
“এখনকার শুক্র আসলে নারকীয় পৃথিবীর মতো,” বলেছে নাসা।
গ্রহটির পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৪৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের তুলনায় এর পৃষ্ঠের চাপ ৯০ গুণ বেশি। এ ছাড়া, গ্রহটি স্থায়ীভাবে ঘন ও বিষাক্ত সালফিউরিক অ্যাসিডের মেঘে আবৃত।
এ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন, গ্রহটির অভ্যন্তরে হাইড্রোজেনের ঘাটতি আছে। এর থেকে ধারণা মেলে, এটি পৃথিবীর অভ্যন্তরের চেয়ে শুষ্ক কেন?
গবেষণা বলছে, শুক্রের বায়ুমণ্ডলে যে কোনো ধরনের পানি হয়ত বাষ্পায়িত হয়ে যায়।
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অবস্থিত নাসার ‘গডার্দ ইনস্টিটিউট অফ স্পেস স্টাডিজ (জিআইএসএস)’র একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছিলেন, গ্রহটি হয়ত একসময় বাসযোগ্য ছিল।
গবেষণা দলটি এতে যে কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করেছে, তা অনেকটা পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন অনুমান করা মডেলটির মতো বলে উঠে এসেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে।
“পৃথিবীতে জলবায়ু পরিবর্তনের মডেল তৈরির জন্য আমরা যেসব টুল ব্যবহার করে থাকি, তার অনেকগুলোই অন্যান্য গ্রহের অতীত ও বর্তমান অবস্থা উভয় বিষয় নিয়ে গবেষণার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে,” বলেন জিআইএসএস’র সাবেক গবেষক ও এ গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক মাইকেল ওয়ে।
“এ গবেষণার বিভিন্ন ফলাফলে দেখা গেছে, আদিম শুক্র হয়ত বর্তমান সময়ের চেয়ে ভিন্ন কিছু ছিল।”
এদিকে, গত বছর আরেক গবেষণায় ‘ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো’র গবেষকরা দাবি করেছিলেন, “শুক্রের ইতিহাস বিবেচনায় নিলে, এটি ৭০ শতাংশের বেশি সময় ধরে অবাসযোগ্য, যা এর আগের বিভিন্ন অনুমানের চেয়েও চার গুণ দীর্ঘ।”