এ নতুন এআই টুলটি তৈরি করেছেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ লিডস অ্যান্ড লিডস টিচিং হসপিটালস এনএইচএস ট্রাস্ট’-এর বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা।
Published : 29 Dec 2024, 03:37 PM
ট্রায়ালে নতুন ধরনের এক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই টুল ব্যবহার করছে যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার কাউন্টি। এতে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগেই তা শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে দাবি তাদের।
হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যের অবস্থা বোঝার জন্য বিভিন্ন ‘জিপি রেকর্ড’ ব্যবহার করছে এ এআই টুলটি। যার মাধ্যমে একজন রোগী ‘অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন বা এএফ’ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন কি না তা নির্দেশ করছে এটি।
জিপি রেকর্ড হচ্ছে, যুক্তরাজ্যে কোনো রোগীর পরিচর্যা সংক্রান্ত তথ্যের সংগ্রহ।
এএফ হার্টের এমন এক অবস্থা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তির হৃদস্পন্দন অনিয়মিত ও প্রায়ই অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ড শহরের বাসিন্দা জন পেঙ্গেলি বলেছেন, নতুন এই এআই টুলের ট্রায়ালে তার এএফ রোগ শনাক্ত হওয়ায় তিনি ‘সত্যিকার অর্থেই কৃতজ্ঞ’। ৭৪ বছর বয়সী এই সাবেক সেনা ক্যাপ্টেন বলেছেন, মারাত্মক স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে এখন প্রতিদিন ওষুধ খান তিনি।
দাতব্য সংস্থা ‘ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন বা বিএইচএফ’ বলেছে, আরও হাজার হাজার মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে তারা জানেন না যে, তারা এ রোগে আক্রান্ত।
শুরুতে এএফ শনাক্ত করা গেলে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসার মাধ্যমে কারো স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে আনা যেতে পারে।
এ নতুন এআই টুলটি তৈরি করেছেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ লিডস অ্যান্ড লিডস টিচিং হসপিটালস এনএইচএস ট্রাস্ট’-এর বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা। ‘ফাইন্ড-এএফ’ নামের ট্রায়ালে এ টুলটিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এতে অর্থায়ন করেছে ‘বিএইচএফ’ ও ‘লিডস হসপিটালস চ্যারিটি’।
হার্টের বিভিন্ন লক্ষণ খুঁজে বের করতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে টুলটির এআই অ্যালগরিদমকে। ফলে এটি নির্দেশ করতে পারে, কোনও ব্যক্তি এএফ রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন কি না। বর্তমানে দেশটির ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের বেশ কয়েকটি হাসপাতালের অস্ত্রোপচারে জিপি রেকর্ড পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে এআই টুল।
ব্যক্তির বয়স, লিঙ্গ এবং তাদের হার্ট ফেইলিওর, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ, দীর্ঘমেয়াদি হার্টের পালমোনারি রোগ’সহ অন্যান্য চিকিৎসাজনিত অবস্থার উপর ভিত্তি করে রোগীর ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে এআই টুলের অ্যালগরিদম।
“এএফ নির্ণয় না করা গেলে এ রোগ নিয়ে বেঁচে থাকার প্রথম লক্ষণ হচ্ছে স্ট্রোক”, বলেছেন ‘ইউনিভার্সিটি অফ লিডস’-এর কার্ডিওভাসকিউলার মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ও ‘লিডস টিচিং হসপিটালস এনএইচএস ট্রাস্ট’-এর অনারারি কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট ক্রিস গেল।
“রোগটি ব্যক্তি ও তার পরিবারের জন্য ধ্বংসের কারণ হতে পারে। এমনকি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের জীবনও পরিবর্তন করে দিতে পারে এটি।”
‘লিডস টিচিং হসপিটালস এনএইচএস ট্রাস্ট’-এর ড. রমেশ নাদারাজাহ বলেছেন, আশা করা হচ্ছে, ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের এই গবেষণা যুক্তরাজ্যব্যাপী ট্রায়ালের পথ খুলে দেবে। ফলে এড়ানো সম্ভব এমন বিভিন্ন স্ট্রোক ঠেকাতে সাহায্য করবে এটি।