আট মাস ধরে কিছু না করে একগুচ্ছ কর্মকর্তাকে বেতন দিতে অর্থ বরাদ্দ করেনি মার্কিন সরকার এবং এমনটি করার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না সে বিষয়টিও স্পষ্ট নয়।
Published : 08 Feb 2025, 05:19 PM
হ্যাকারদের হাত থেকে আমেরিকাকে রক্ষা করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বাজেটে নেই বলে মনে করছেন অনেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এনপিআর প্রতিবেদনে লিখেছে, নিজেদের চাকরিতে থাকা বা সরকারি ‘বাইআউট’ অর্থাৎ নিয়ন্ত্রক শেয়ার কেনার মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটিস সাইবারসিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি’ বা সিআইএসএ-এর সদস্যদের।
ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের উপদেষ্টা গোষ্ঠী ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ বা ডিওজিই-এর নির্দেশনায় বর্তমান প্রশাসন ফেডারেল সরকারকে ছেঁটে ফেলতে যে কয়েকটি পদ্ধতি ব্যবহার করছে তার মধ্যে এ ‘বাইআউট’ প্রোগ্রামটি একটি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
২০১৮ সালে প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনের সময় সাইবার হামলা থেকে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রক্ষা ও ভবিষ্যতে আরও নিরাপদ অবকাঠামো তৈরির বিষয়ে সরকার ও তার অংশীদারদের পরামর্শ দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি হয়েছিল সিআইএসএ।
এনগ্যাজেট লিখেছে, ২০২৪ সালে হ্যাকিং দল ‘সল্ট টাইফুন’-এর তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল এ সংস্থাটি। দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য মার্কিন বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানিকে ব্যবহার করেছিল হ্যাকিং দলটি। বর্তমানে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠছে। তাই কর্মীর অভাব সংস্থাটির জন্য সমস্যার তৈরি করতে পারে।
তবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও বিভাগকে ছেঁটে ফেলা বা কার্যকরভাবে বাদ দেওয়ার পরিণতি ডিওজিই বা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য উদ্বেগের বিষয় বলে মনে হচ্ছে না। সিআইএসএ ছাড়াও দেশটির আইআরএস, সিআইএ ও শিক্ষা বিভাগের কর্মীরাও এই শেয়ার কেনার আলটিমেটাম পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে প্রতিবেদনে লিখেছে, এটি কেনার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের ৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ট্রাম্প প্রসাশন। এর মাধ্যমে অক্টোবরের মধ্যে বেতন গ্রহণ করতে বা ব্যক্তিগতভাবে কাজে ফিরে আসতে এবং নতুন কর্মক্ষমতা মান মেনে নিতে ও ‘নির্ভরযোগ্য, অনুগত ও বিশ্বস্ত’ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেবে তারা।
২০২২ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার অধিগ্রহণের পরে মাস্কও প্ল্যাটফর্মটির কর্মীদের একই রকম প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে তখনকার আর এখনকার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো বাজেট।
আট মাস ধরে কিছু না করে একগুচ্ছ কর্মকর্তাকে বেতন দিতে অর্থ বরাদ্দ করেনি সরকার এবং এমনটি করার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না সে বিষয়টিও স্পষ্ট নয়। কারণ কংগ্রেস সাধারণত শেষ পর্যন্ত সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে। এর বাইরে, এক আইনি লড়াই পুরো বিষয়টিকে বিতর্কিত করে তুলতে পারে।
রয়টার্স লিখেছে, এরইমধ্যে এ শেয়ার কেনার চুক্তির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন বস্টনের একজন মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট বিচারক, যেখানে সরকারি কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কম করে হলেও সোমবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন তিনি। তবে, এর মেয়াদ বাড়ানোর আরও একটি সম্ভাবনা এখনও রয়েছে।