“আমাদের ধারণা, ব্ল্যাক হোলের এমন চেহারার মানে দাঁড়ায়, এর চারপাশে থাকা ডিস্কটি আলোর গতির প্রায় ৬০ শতাংশ গতিতে ঘুরছে।”
Published : 29 Oct 2024, 01:34 PM
মিল্কিওয়ে ছায়াপথের একেবারে কেন্দ্রে থাকা বিশালাকায় ব্ল্যাক হোলের প্রথম জনপ্রিয় ছবিটি সম্ভবত নিখুঁত নয়, এমনই দাবি উঠেছে নতুন এক গবেষণায়।
ছবিটি প্রাথমিকভাবে প্রকাশ পেয়েছিল ২০২২ সালে, যার বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই এর পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন ‘ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ’ (ইএইচটি) নামের এক আন্তর্জাতিক গবেষণা দলের যৌথ উদ্যোগ।
ছবিটিতে একটি ডোনাট-আকৃতির রিং দেখা যাচ্ছে, যেখানে একটি কমলালেবুর মতো গোলাকার গড়ন ও এর মাঝখানে কালো গর্ত আছে। অন্ধকার অঞ্চলটি খোদ ওই ব্ল্যাক হোলের একেবারে মাঝামাঝিতে অবস্থিত, যেখানে কমলা রঙের আকৃতিতে সেইসব গ্যাস দেখা যায়, যেগুলো এর আশপাশে থাকা শক্তিশালী মহাকর্ষ বল থেকে সৃষ্ট তীব্র তাপমাত্রার কারণে উত্তপ্ত অবস্থায় আছে।
কিন্তু নতুন এক গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, এই আকৃতি আসলে ভুল। ‘ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি অফ জাপান (নাওজ)’ নেতৃতত্বাধীন নতুন এ গবেষণা অনুসারে, ব্ল্যাক হোলের চারপাশ থেকে সংগৃহীত উপাদানের ডিস্কটি হয়ত আরও দীর্ঘ।
এ গবেষণায় ওই আসল ছবি তৈরির জন্য ব্যবহৃত বিশাল আকারের ডেটা সংগ্রহের পাশাপাশি সেগুলো যাচাইও করা হয়।
তবে, গবেষকরা বলছেন, ওই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ত্রুটির কারণে ওই ডেটা সম্ভবত ভুলভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তারা এ দাবি করেছেন ২০১৭ সালে সংগ্রহ করা ডেটা খতিয়ে দেখে, যা ব্যবহার করে এ ছবিটি তৈরি হয়েছিল।
“আমাদের ছবিটি কিছুটা আড়াআড়ি দিকে ছড়ানো। আর বাঁ দিকের অর্ধেকের তুলনায় ডান দিকের অর্ধেকের উজ্জ্বলতা বেশি,” বলেন নাওজ-এর গবেষক মিয়োশি মাকোটো।
“আমাদের ধারণা, ব্ল্যাক হোলের এমন চেহারার মানে দাঁড়ায়, এর চারপাশে থাকা ডিস্কটি আলোর গতির প্রায় ৬০ শতাংশ গতিতে ঘুরছে।”
“তবে এই রিং-আকৃতির ছবি কোথা থেকে এল? সেটাই বড় প্রশ্ন। আসলে কোনো টেলিস্কোপই জ্যোতির্বিজ্ঞানের ছবি একেবারে নিখুঁতভাবে ধারণ করতে পারে না।”
“আমাদের অনুমান, রিংয়ের ছবিটি ‘ইএইচটি’র ছবি বিশ্লেষণ চলাকালীন এক ত্রুটি থেকে তৈরি হয়েছে, যা এর মূল কাঠামোর একটি শৈল্পিক রূপ তুলে ধরে।”
এইসব দাবির বিস্তারিত উঠে এসেছে ‘অ্যান ইন্ডিপেন্ডেন্ট হাইব্রিড ইমেজিং অফ এসজিআর এ* ফ্রম দ্য ডেটা ইন ইএইচটি ২০১৭ অবজারভেশন্স’ শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে, যা প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘মান্থলি নোটিসেস অফ দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রনমিকাল সোসাইটি’তে।