প্রচার চালিয়েও রংপুর সিটি ভোট থেকে সরে গেলেন জামায়াত নেতা

“সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনেরও কোনো ক্ষমতা নেই।”

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2022, 12:35 PM
Updated : 29 Nov 2022, 12:35 PM

মেয়র পদে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার ও গণসংযোগ চালিয়ে নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছিলেন কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাহবুবুর রহমান বাদল।

মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা জানান দলটির রংপুর মহানগর শাখার সাবেক আমির সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল।

বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জামায়াত নেতা বলেন, “বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। এ কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা সঠিক হবে না। তাই নির্বাচনে অংশ গ্রহণের লক্ষ্যে প্রচার চালানোসহ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হলেও তা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনেরও কোনো ক্ষমতা নেই। নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশে চলে। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।“

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ থেকেই প্রচার চালিয়ে আসছিলেন জামায়াত নেতা মাহবুবুর রহমান বেলাল। নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় দলটির পক্ষে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই প্রচার চালাচ্ছিলেন। তার পক্ষে নগরজুড়ে পড়েছে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন। বিলি করা হয়েছে প্রচারপত্র। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নারী কর্মীরা ভোট প্রার্থনা করেছেন।

এদিকে, তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি। দলটির কোনো নেতা ভোটের মাঠেও নেই।  

বিকাল পর্যন্ত রংপুর সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের প্রার্থী শাফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের প্রার্থী তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন, মেহেদী হাসান বনি, আতাউর জামান বাবু ও আবু রায়হান।

২০১২ সালের ২৮ জুন পৌরসভা থেকে ১৮টি ওয়ার্ড বর্ধিত করে ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে রংপুর সিটি করপোরেশন গঠন হয়। এরপর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন।

২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। বর্তমানে এ সিটির জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। আর ভোটার রয়েছে চার লাখের বেশি।

তৃতীয়বারের মতো রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৭ ডিসেম্বর। এদিন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর।