সাজার নকলের কপি পাওয়া গেলে সোমবার আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আইনজীবী রফিকুল ইসলাম আধার।
Published : 10 Mar 2024, 09:31 PM
শেরপুরের নকলা উপজেলায় তথ্য অধিকার আইনে আবেদনের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাংবাদিককে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনার অনুসন্ধান শুরু করেছে তথ্য কমিশন।
রোববার সকালে তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক এই কার্যক্রম শুরু করেন।
তিনি সকাল সাড়ে ১০টায় অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে শেরপুর জেলা কারাগারে যান। সেখানে তথ্য কমিশনার সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানার সঙ্গে কথা বলেন এবং দুই ঘণ্টাব্যাপী রানার বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন।
দুপুরে তথ্য কমিশনার নকলা পৌর শহরের কুর্শাবাদাগৈড় এলাকায় সাংবাদিক রানার বাসায় যান এবং তার স্ত্রী বন্যা আক্তারের সঙ্গে বলেন। এ সময় তিনি তথ্য অধিকার আইনে সাংবাদিক রানার আবেদনের দুটি কাগজ সংগ্রহ করেন।
বিকালে তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিনের সঙ্গে সাংবাদিকের আবেদনের বিষয়ে কথা বলেন ও সাজার নথি দেখেন।
এরপর বিকালে শহীদুল আলম ঝিনুক সংবাদ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, তথ্য কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী তিনি সাংবাদিক রানার পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য এসেছেন। এর অংশ হিসেবে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং তথ্য সংগ্রহ করছেন। আইন অনুযায়ী অনুসন্ধান কার্যক্রম সম্পন্ন করে দ্রুতই এ ব্যাপারে কমিশনে প্রতিবেদন দেবেন।
অনুসন্ধানে পরিবারের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক বলেন, “বিষয়টি বিচারাধীন। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
মঙ্গলবার নকলা উপজেলার দেশ রূপান্তর পত্রিকার সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানা ইউএনওর কাছে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় ‘অসদাচরণ ও পরিবেশ নষ্টের’ অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
‘তথ্য চেয়ে’ ছয় মাসের দণ্ড নিয়ে কারাগারে সাংবাদিক
ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাংবাদিক রানার সাজা: শেরপুর প্রেস ক্লাবের উদ্বেগ
এ বিষয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর তথ্য কমিশনের পক্ষ থেকে তথ্য অধিকার আইনের ধারা ২৫ (৫) অনুযায়ী বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এদিকে রোববার ভ্রাম্যমাণ আদালতের আপিল কর্তৃপক্ষ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (ডিএম) কাছে সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য নকলের কপি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। কপি পাওয়া গেলে সোমবার এ বিষয়ে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও আইনজীবী রফিকুল ইসলাম আধার।
নকলা উপজেলা প্রশাসন দাবি করেছে, ইউএনওর দপ্তরে গিয়ে সরকারি কাজে বাধা, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি, অসদাচরণ এবং একজন নারী করমচারীকে উত্ত্যক্তের দায়ে মঙ্গলবার নকলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম মো. শিহাবুল আরিফ সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।