গ্রামের সবার মুখে মুখে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি।
Published : 13 Mar 2025, 08:47 PM
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আট বছরের শিশুটির বাড়িসহ গোটা এলাকায় এখন শোকের মাতম।
শিশুটির ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ বাবা কিছুই বলতে পরছেন না। বুক চাপড়ে কাঁদছেন ভাইবোনসহ আত্মীয়-স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার বিকালে মাগুরার শ্রীপুরে জারিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, মৃত্যুর খবর শুনে সবাই ভিড় করছেন শিশুটির বাড়িতে।
স্থানীয় সব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পান্না খাতুন বলেন, “আমাদের একটাই দাবি, হিটু শেখসহ চার আসামির ফাঁসি। ”
একই ইউনিয়নের সদস্য রূপ কুমার বলেন, “আমরা শুধু ফাঁসি চাই না। এটা যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হয়, সেই দাবি সরকারের কাছে রাখছি।”
জারিয়া গ্রামের সবার মুখে মুখে একটাই দাবি, ‘ধর্ষকদের ফাঁসি’, ‘ধর্ষকদের ফাঁসি’। একই সঙ্গে বিচার কার্যক্রম যেন কোনোভাবে বিলম্বিত না হয় সেই দাবিও তাদের।
এদিকে, যে বাড়িতে শিশুটি ধর্ষিত হয়েছে সেই বাড়িটি এখন এলাকাবাসীর কাছে ‘ধর্ষক হিটু শেখের’ বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বাড়িটিতে এখন কেউ নেই। বাড়ির মালিক ধর্ষক হিটু শেখ,তার স্ত্রী জাবেদা বেগম, দুই ছেলে সজীব শেখ, রাতুল শেখ সবাই কারাগারে।
অন্যদিকে বিকালে শিশুটির মরদেহ হেলিকপ্টারে করে মাগুরা জেলা স্টেডিয়ামে আসার পর শহরের নোমানী ময়দানে জানাজা শেষে তাকে শ্রীপুরর সোনাইকুন্ডি গ্রামে কবরস্থানে দাফন করা হবে।
গোটা কবরস্থানের আশপাশ শিশুটির স্বজনসহ গ্রামবাসীর কান্নার শব্দে ভারি হয়ে উঠেছে।
মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ৬ মার্চ শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। সেই খবরে সারা দেশে তৈরি হয় ক্ষোভ।
এ ঘটনায় শিশুটির মা গত ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজীবের অপ্রাপ্তবয়স্ক ভাই (১৭) এবং তাদের মা জাবেদা বেগম (৪০)। তাদের চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ৬ মার্চই তাকে ঢাকা মেডিকেলের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) ভর্তি করা হয়।
পরে ৭ মার্চ রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ৮ মার্চ শিশুটিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর- আইএসপিআর জানিয়েছে।
এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মাগুরায় পৌঁছাল শিশুর মরদেহ
মাগুরার ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে বাঁচানো গেল না
মাগুরার শিশুকে ধর্ষণ: ১৮০ দিনে বিচার শেষ করার নির্দেশ