সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি থেকে নয় মাস প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে আর পর্যটক যেতে পারবেন না।
Published : 30 Jan 2025, 06:27 PM
কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিনে ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারি বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করে পর্যটকদের যাতায়াত উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন দ্বীপবাসী।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় টেকনাফ উপজেলার সেন্ট মার্টিন স্টেশনে দ্বীপবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে এ দাবি জানানো হয়।
কর্মসূচিতে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় হোটেল-মেটেল ও কটেজ মালিক সমিতি, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার-টুয়াক, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি, ট্রলার মালিক সমিতি, স্পিডবোট মালিক সমিতি, ভ্যান গাড়ি মালিক-শ্রমিক সমিতি, বাজার ব্যবসায়ী সমিতিসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কয়েকশ লোক অংশ নেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণলয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী নয় মাস প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে আর পর্যটক যেতে পারবেন না। সেখানে ভ্রমণের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে দ্বীপের বাসিন্দা, পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
সেন্ট মার্টিন বাজার সমিতির সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলোত্তর পথসভায় বক্তব্য দেন টুয়াক সদস্য আকতার নুর, আইনজীবী ও সমাজকর্মী কেফায়েত উল্লাহ খান, সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ, সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব উল্লাহ খান, হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন।
হোটেল-মোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি এম এ রহিম জিহাদী বলেন, “অতীতে এ রকম কোনো সংকট দ্বীপে তৈরি হয়নি। এখন যদি দ্বীপে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে নানামুখী সংকটে পড়বেন বাসিন্দারা। দ্বীপে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার মানুষ। তাই মানবিক বিবেচনায় পর্যটকদের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেন্ট মার্টিন দ্বীপ উন্মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।”
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পর্যটনের ওপর ১০ হাজারের বেশি মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। জাহাজ চলাচল ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হলে সেন্টমাটিনের বাসিন্দাদের উপকার হত।
দ্বীপের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, “দ্বীপবাসীর জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে সরকার যেন অন্তত ফেব্রুয়ারি মাসে জাহাজ চালু রাখে। না হলে সেন্ট মাটিনের মানুষ না খেয়ে মরবে।”
অন্যান্য বক্তারা বলেন, চলতি পর্যটন মৌসুমে সরকারি বিধি-নিষেধের কারণে পর্যটক যাতায়াত সীমিত থাকায় এমনিতেই দ্বীপবাসী নানা সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত। এতে আগামী বর্ষা মৌসুমে দ্বীপবাসীর দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “মানববন্ধনের বিষয়টি আমি শুনেছি। পর্যটন মৌসুমে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এখানকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য মানববন্ধন করেছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।”
এদিকে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ ন ম হেলাল উদ্দিন উচ্চ আদালতে একটি রিট করেছেন। ২৮ জানুয়ারি দিন ধার্য থাকলে রিটের শুনানি হয়নি। আদালত শুনানির জন্য ৪ ফেব্রুয়ারি দিন দিয়েছে।