লক্ষ্মীপুরে ইসলামী ব্যাংকের শাখায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ।
Published : 17 Apr 2025, 03:58 PM
লক্ষ্মীপুরে ব্যাংকের ভেতরে প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে এক নারীর ৮০ হাজার টাকা খোয়া গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের চক বাজার মসজিদ মার্কেটে ইসলামী ব্যাংকের শাখায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ফজলুল হক।
এ ঘটনার ৬ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়েছে।
ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের বাঞ্চানগর এলাকার খোরশেদ আলমের স্ত্রী।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, তিনজন লোক আগে থেকে ব্যাংকের ভেতর অবস্থান করছিলেন। এর মধ্যে একজনের পরনে পাঞ্জাবি, মাথায় টুপি ও মুখে সাদা দাঁড়ি ছিল। অন্য দুইজন শার্ট-প্যান্ট পরা ছিলেন; তাদের একজনের মুখে দাঁড়ি দেখা গেছে।
ব্যাংকের ভেতর তাদের ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। বিশেষ করে টাকা জমা দেওয়ার জন্য রশিদ রাখার স্থানে তাদেরকে বেশি সময় দেখা গেছে।
এক পর্যায়ে পাঞ্জাবি পরা ব্যক্তিটি সোফায় গিয়ে বসেন। সেখানে টাকা গুনছিলেন সেলিনা বেগম। এ সময় পাঞ্জাবি পরা ব্যক্তি সেলিনার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শার্ট-প্যান্ট পরা লোককে গুণতে দেন। তাকেও টাকা গুণতে দেখা যায়। তখনও টুপি পরা ব্যক্তি ওই নারীর সঙ্গে বসেছিলেন।
চক্রটির আরেক সদস্য চারপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। এর মধ্যে শার্ট-প্যান্ট পরা লোকটি তার মানিব্যাগ থেকে কী যেন (টাকা) বের করে ওই নারীকে দেয়। পরে ভুক্তভোগী নারী কাউন্টারের দিকে গেলে চক্রের তিন সদস্যকে টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যেতে দেখা যায়।
সেলিনা বেগম বলেন, “আমার ব্যাংক হিসাব থেকে দুই লাখ তুলে সোফায় গিয়ে বসি। এর মধ্যে এক লাখ টাকা গুণে সাইট ব্যাগে রেখেছি। অপর এক লাখ টাকা গুণনার সময় এক ‘মুরুব্বি’ এসে বলেন, ‘মা তোমার পাশে একটু বসি’, এ কথা বলে তিনি বসে পড়েন।
“এক পর্যায়ে তিনি আমাকে বলেন, ‘টাকাগুলো চেক করে নিও, টাকা ছেঁড়া পড়ে।’ উনি আমাকে বলেন দেখো, ‘আমার দুই হাজার টাকা ছেঁড়া পড়েছে।’ এরপর কী হয়েছে আমি জানি না, আমার সব টাকা ওনাকে দিয়ে দিয়েছি। এ সময় একটা ছেঁড়া নোট দিয়ে আমাকে কাউন্টারে পাঠিয়েছে পরিবর্তনের জন্য। নোট পরিবর্তন করে এসে দেখি তারা নেই।”
তবে প্রতারক চক্রটি ৮০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে বলে দাবি ভুক্তভোগী সেলিনা বেগমের।
লক্ষ্মীপুর ইসলামী ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক আইয়ুব আলী বলেন, “ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। পরে পুলিশ এসে সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও নিয়ে গেছে।
“ভুক্তভোগী গ্রাহক যাকে টাকা গুণতে দিয়েছিলেন, তারাই টাকা নিয়ে গেছে। টাকা গুণতে সমস্যা হলে আমার কাছেও আসতে পারতেন তিনি। অচেনা-অজানা লোকদের টাকা দেওয়া ঠিক হয়নি।”
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফজলুল হক বলেন, সিসিটিভির ভিডিও সংগ্রহ করা হয়েছে; তা পর্যালোচনা করে প্রতারক চক্রের সদস্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
এর আগে ২৩ মার্চ ইসলামী ব্যাংকের একই শাখার ভেতরে প্রতারক চক্রের কাছে সেলিনা আক্তার নামের এক গ্রাহকের টাকা খুঁয়েছেন। পরে তিনি থানায় অভিযোগ করেন। ঘটনার ২৫ দিন পার হলেও কাউকে শনাক্ত বা আটক করতে পারেনি পুলিশ।