বিভাগীয় কমিশনারের মধ্যস্থতায় বিদ্যুৎ বিল নিয়ে সিটি কর্পোরেশন ও ওজোপাডিকোর মধ্যে সৃষ্ট সমস্যায় সমঝোতা হয়েছে।
Published : 23 Sep 2022, 01:10 AM
বকেয়ার কারণে বরিশাল নগরীর কয়েকটি সড়কের বাতি দুদিন বন্ধ থাকার পর ফের চালু হয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনারের মধ্যস্থতায় সিটি কর্পোরেশন ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর (ওজোপাডিকো) মধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।
দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় সমস্যার সমাধান হয় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সবই সমাধান হয়েছে। যেটাই হোক, একটা ঘটনা ঘটেছে। জনগণের স্বার্থে আমরা একমত হয়েছি। মানুষের ভোগান্তি লাগব হয়েছে, এটাই মুখ্য বিষয়।”
তিনি আরও বলেন, যে কারণে হোক সিটি মেয়রের দায়িত্বে আমি, সে কারণে দায়-দায়িত্ব আমার ওপর পড়ে। কারো ওপর অজুহাত দিয়ে তো লাভ নেই। এখন থেকে প্রতিমাসের বিল প্রতিমাসে দেওয়ার চেষ্টা করব। বকেয়া যেন না হয়। বকেয়া ছিল, দায়ভার তো আমাদেরই।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, সংযোগ চালু হয়েছে। পানি সরবরাহসহ সবকিছু নরমাল হয়ে গেছে। তা তো আপনারা দেখছেন।
এ সময় মেয়র আরো বলেন, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি; বন্ধ ছিল।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ওজোপাডিকোর খুলনা ও ঢাকা থেকে কর্মকর্তারা এসেছিলেন। তাদের সাথে মেয়রের একটা আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় সমস্যা সমাধান হয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি নয়, আলোচনা না হওয়ার কারণে দুই দিন একটু সমস্যা হয়েছে। এখন থেকে আর কোনো সমস্যা দেখছি না।”
ওজোপাডিকো বরিশালের তত্ত্বাবধায় প্রকৌশলী এটিএম তারিকুল ইসলাম বলেন, বিভাগীয় কমিশনারের মধ্যস্থতায় সমাধান হয়েছে। এখন থেকে প্রতিমাসের বিদ্যুৎ বিল নিয়মিত পরিশোধ ও বকেয়া যে বিল রয়েছে সেটি ধীরে ধীরে পরিশোধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় বরিশাল ক্লাবে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলামসহ সিটি করপোরেশন ও ওজোপাডিকোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিটি কর্পোরেশনের কাছে ওজোপাডিকোর ৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা বকেয়া পড়ায় রোববার থেকে বরিশাল নগরীর ১৫টি সড়কের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর অধীনে ৭টি ও ২ এর অধীনে ৮টি সড়ক ছিল।
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার বিষয়টি মঙ্গলবার থেকে টের পেয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস।
মঙ্গলবার রাত থেকে বরিশাল নগরীর সড়কবাতি বন্ধ ছিল। দুই দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সড়ক বাতি জ্বালানো হয়।
ওজোপাডিকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এসএম তারিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত ৮ অগাস্ট বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাছে বকেয়া প্রায় ৫৯ কোটি টাকা পরিশোধে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশ প্রাপ্তির পরে নগর ভবন থেকে প্রায় ৭৮ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়।
তিনি বলেন, বকেয়া আদায়ে সরকারের কঠোর অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ও নির্দেশেই সিটি করপোরেশনের সড়ক বাতির ৪৮টি সংযোগের মধ্যে মাত্র ১৫টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।
“কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সিটি করপোরেশন নগরীর সব রাস্তার বাতি বন্ধ রাখে।”
প্রতিমাসে বরিশাল সিটি করপোরেশন সড়ক বাতি ও পানির পাম্পসহ বিভিন্ন সংযোগের বিপরীতে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
এর মধ্যে ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এ প্রতিমাসে ২৫ লাখ টাকা বিল আসে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন।
ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফারুক হোসেন জানান, তাদের প্রায় কাছাকাছি বিল হয়।
আরও পড়ুন: