সড়কবাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন: বরিশাল মেয়রের শঙ্কা নিরাপত্তায়

বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় বরিশাল নগরীর ১৫টি সড়কে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2022, 07:02 PM
Updated : 21 Sept 2022, 07:02 PM

বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় বরিশাল নগরীল সড়কবাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

 বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর কালিবাড়ী রোডে সেরনিয়াবত ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।

 বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় বরিশাল নগরীর ১৫টি সড়কে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি-ওজোপাডিকো।

 মেয়র সাদিক সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা ও চলমান এসএসসি পরীক্ষার সময়ে সড়ক বাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় নগরবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

 মেয়র বলেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের বকেয়া নিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সাথে তার কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে প্রতিমন্ত্রী ২৫ কোটি টাকা পরিশোধ করতে বলেছেন।

 কীভাবে সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত হচ্ছে তা সকলেরই জানা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “বকেয়ার জন্য সড়ক বাতি ও পানির সংযোগ বন্ধ করে দেয়া দুঃখজনক।”

 বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য নিজের বাসা, দপ্তর এমনকি সিটি কর্পোরেশন ভবনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারত জানিয়ে মেয়র বলেন, জনগণকে জিম্মি করে তাদের ভোগান্তিতে ফেলার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না, বলেন মেয়র।

 এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো ছাড়া আর কিছু করার নেই বলে মেয়র উল্লেখ করেন।

 মতবিনিময় সভায় মেয়র জানান, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের থেকে অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার কাছে বেশি বকেয়া রয়েছে। শুধুমাত্র বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। 

 মতবিনিময় সভায় উপস্থিত প্যানেল মেয়র গাজী নইমুল হোসেন লিটু বলেন, ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল বকেয়া বিদ্যুৎ  পরিশোধের জন্য জুম অ্যাপসের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগের আন্তঃ মন্ত্রণালয়-এর এক সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে যেসব পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আছে এবং তা পরিশোধ না করলে সেসব পৌরসভা ও কর্পোরেশনের সড়কবাতি ব্যতীত অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যেতে পারে। পৌরসভাসমূহ ও সিটি কর্পোরেশন সমূহ প্রথমে মূল বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করবে। এককালীন পরিশোধ করতে না পারলে কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এবং সারচার্জ মওকুফের জন্য বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা /কোম্পনীর কাছে প্রস্তাব দিতে হবে।

 ওই সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সড়কবাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কোনো সুযোগই নেই বলে তিনি জানান।

 মেয়র বলেন, কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই সড়কবাতিসহ ১১টি পানির পাম্পের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

 তিনি জানান, তার দায়িত্ব পালনকালে মোট ১৫ কোটি ৮ লাখ ৪৮ হাজার পাওনার বিপরীতে ইতোমধ্যে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

“সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণের সময়ে মোট বকেয়া ছিল ২০ কোটি ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার ১৫ টাকা, যার বিপরীতে কোনো টাকাই পরিশোধ করা হয়নি।”

 তিনি আরও জানান, সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের সময়ে ২১ কোটি ৭৪ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৯ টাকাসহ মোট বকেয়া দাঁড়ায় ৪২ কোটি ১১ লাখ ২৯ হাজার ৪৪ টাকা। এর বিপরীতে সাবেক মেয়র কামাল পরিশোধ করেছিলেন ১ কোটি ৩৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা।

 মেয়র তার দেওয়া হিসাব বিশ্লেষণ করে বলেন, বিগত দুই পরিশোধের সময়ে বকেয়া টাকা যেমন আদায় করা হয়নি তেমনি ওই সময়ে সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়নি।

 মতবিনিময়কালে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর, প্যানেল মেয়র-১ গাজী নঈমুল হোসেন লিটু, প্যানেল মেয়র-২ রফিকুল ইসলাম খোকন, বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।

 আরও পড়ুন:

বকেয়ার জন্য বরিশাল নগরীতে সড়কে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন