অবৈধভাবে অবস্থানের অভিযোগে গ্রেপ্তার করার পর কাইয়ুমকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিল মালয়েশিয়া সরকার।
Published : 19 Jan 2024, 12:26 AM
মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমকে ফেরত পাঠানোর আদেশ স্থগিত করে দিয়েছে দেশটির হাই কোর্ট।
বৃহস্পতিবার তার আবেদন গ্রহণ করে এ আদেশ দেন বিচারক মুনিয়ান্দি। এর ফলে আপাতত মালয়েশিয়া ছাড়তে হচ্ছে না কাইয়ুমকে।
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয়মেইল এক প্রতিবেদনে লিখেছে, এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৫ এপ্রিল দিন রেখেছেন বিচারক।
কাইয়ুমের পক্ষে গত সোমবার ওই আবেদন করেন আইনজীবী কি শু মিন। রাষ্ট্রপক্ষে ফেডারেল অ্যাটর্নি মোহাম্মদ ফিরদাউস সাদিনা আলী আপত্তি না জানানোয় আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে।
বিএনপির ক্ষুদ্রঋণবিষয়ক সম্পাদক এম এ কাইয়ুম এক সময় ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। সাবেক এই ওয়ার্ড কমিশনার ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে গুলশান-বাড্ডা আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন।
২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানে ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, বিএনপি নেতা কাইয়ুমের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
পরের বছর পুলিশ যে অভিযোগপত্র দেয়, সেখানে কাইয়ুমসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। সেখানে বলা হয়, “হামলাকারীদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল একজন শ্বেতাঙ্গকে হত্যা করে দেশ-বিদেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এ পরিকল্পনা করা হয়।”
তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডের পর কাইয়ুমের ভাই আব্দুল মতিনকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করা হলেও কাইয়ুম ছিলেন লাপাত্তা। তখন থেকেই তার মালয়েশিয়ায় অবস্থানের খবর আসে সংবাদমাধ্যমে।
স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে, অবৈধভাবে অবস্থানের অভিযোগে গত ১২ জানুয়ারি কাইয়ুমকে গ্রেপ্তার করে মালয়েশিয়ার পুলিশ।
তাকে ‘অন্যায্যভাবে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে দাবি করে মানবাধিকার সংগঠন সুয়ারা রাকায়েত মালয়েশিয়া।
সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সেভান দোরাইস্বামী বলেছেন, কাইয়ুম জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর স্বীকৃত ‘শরণার্থী’। তার ইএনএইসিআর কার্ড আছে।
“ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট যাতে আদালতের আদেশ পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করে, আমরা সেই দাবি রাখছি। কাইয়ুমকে ফেরত পাঠানোর ভাবনা থেকে সরে তারা আসুক।”
হেবিয়াস কর্পাস আবেদনে কাইয়ুমের মেয়ে যে হলফনামা যুক্ত করেছেন, তাতে বলা হয়েছে, তার বাবা ১৫ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন।
কাইয়ুমের পাসপোর্টে মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম কর্মসূচির ভিসা আছে বলেও সেখানে দাবি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতার মেয়ে দাবি করেছেন, কাইয়ুমকে জোর করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে ‘আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে’ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কাইয়ুমকে বাংলাদেশে পাঠালে তার নিরাপত্তা ‘হুমকির মুখে পড়বে’ এবং ‘রাজনৈতিক নিপীড়নের মুখোমুখি’ হতে হবে বলেও হলফনামায় দাবি করা হয়েছে।