ঢাকায় সমাবেশ করতে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পরামর্শের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সরকার যে জায়গা ‘ভালো বলে’ মনে করে সেটিরই ব্যবস্থা করবে।
শনিবার দুপুরে ঢাকা ক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকের এ কথা জানান তিনি।
বিএনপি তিনটি স্থানের নাম উল্লেখ করে সমাবেশের জন্য আবেদন করেছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “অফিসিয়ালি যেটা এসেছিল তারা তিনটি জায়গা চেয়েছিল, তার মধ্যে একটি ছিল- যেটি পুলিশ কমিশনার জানিয়ে দিয়েছেন।”
এর আগে বৃহস্পতিবার কামাল বলেছিলেন, বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিতে পুলিশকে বলেছেন তিনি।
বিভাগে বিভাগে সমাবেশের পর আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। তারা নয়া পল্টনে সেই সমাবেশ করতে ইতোমধ্যে পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছে।
শনিবার রাতে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আপাতত আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশের বিষয়টি সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি।”
বিএনপি নয়া পল্টন ছাড়া সমাবেশ করবে না বলে যে ঘোষণা দিয়েছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “কোথায় হবে- না হবে, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর আইনশৃঙ্খলা বিষয়টি পুলিশকেই দেখতে হবে, তারা দেখবে না।
"আমি আপাতত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি, গোয়েন্দা রিপোর্ট আসলে ফাইনাল সিদ্ধান্ত দু-চার দিনের মধ্যে নিব।"
পুলিশ অনুমতি না দিলেও বিএনপি নেতারা নয়া পল্টনে সমাবেশ করতে অনড় অবস্থান নিয়েছে।
শনিবার রাতে ঢাকা উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমানুল্লাহ আমান জানান, তারা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে দ্বিতীয় দফায় ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও একই কথা বলে আসছেন।
শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া বিকল্প কোনো চিন্তা আপনাদের আছে কি না- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এটাই আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছে জিজ্ঞাসা এত বড় গ্যাদারিং করবে, এই স্পট ছাড়া অন্য কোথায় আছে? তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান- পার্লামেন্ট ভবনের সামনে এগুলো চেয়েছিল। কিন্তু সংসদ ভবনের সামনে কাউকে দেওয়া হয় না।”
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ সভা, সমাবেশ কাউন্সিল অধিবেশন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটা সবার জন্য ‘সুইটেবল’ মনে করা হচ্ছে।
“সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের কিছু দলীয় প্রোগ্রাম আছে সেগুলো শেষ হয়ে যাবে। এরপর তারা এটা ব্যবহার করতে পারবে।”
‘পল্টনে দিতে সরকার বাধ্য হবে’ বিএনপি নেতাদের এমন মনোভাবের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “সরকারের বাধ্যবাধকতা বলে কিছু নেই। তবে এখন তারা এ ব্যাপারে কী বলছে সেটা আমি জানি না।”
নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে গত ১৫ নভেম্বর ডিএমপিতে আবেদন করে বিএনপি। তাদের প্রতিনিধি দল সেদিন ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখাও করে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ থেকে সরকার পতনের কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
অন্যদিকে সড়কে তাদের সমাবেশ করতে চাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলে আসছেন, বিএনপি নয়া পল্টনে সমাবেশ করতে চাইছে দেশে বিশৃঙ্লা সৃষ্টির জন্য।