নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে অনুমতির অপেক্ষা করতে হয় না দাবি করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সেখানেই তারা সমাবেশ করবেন।
বুধবার সকালে ঢাকা জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত নেতাদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
এ সময় ‘সরকারের ফাঁদে’ বিএনপি পা দেবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গয়েশ্বর বলেন, ইতোমধ্যে ৭টি সমাবেশ হয়েছে। এর সবগুলোতেই আওয়ামী লীগ সরকার সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। প্রশাসন দিয়ে চেষ্টা করেছে, গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে।
“সুতরাং ঢাকায় ১০ তারিখের (১০ ডিসেম্বর) সমাবেশে তারা সংঘাত সৃষ্টি করবে- এটা স্বাভাবিক মনে করতেছি, অস্বাভাবিক না। রাতারাতি এরা ভালো হয়ে যাবে এটাও আমরা আশা করি না। তবে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা (বিএনপি) সরকারের ফাঁদে পা দেবো না। সংঘাত এড়িয়েই আমরা সমাবেশে আসব।”
অনুমতির বিষয়ে গয়েশ্বর বলেন, “ইতিমধ্যে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে চাওয়া হয়েছে। তারা দিতে যদি অপারগ হয় আমরা করব।
“১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ আমরা যেখানে বলেছি, সেখানেই হবে। এটা হবেই। এটা অনুমতির অপেক্ষা লাগবে না। অনুমতি দিলেও করব, না দিলেও করব। মনে রাখতে হবে, দেশটা আমাদের সকলের।”
জ্বালানি তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, ভোলা-মুন্সিগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ-যশোরে দলীয় কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে নেতা-কর্মীদের হত্যা, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দা্বিতে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিএনপি দুই মাসব্যাপী বিভাগীয় সমাবেশের কর্মসূচি শুরু করে।
এর ধারাবাহিকতায় আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় এবং ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিভাগীয় সমাবেশ রয়েছে; সবশেষ ১০ ডিসেম্বর হবে ঢাকায় সমাবেশ।
এর আগে মঙ্গলবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সমাবেশের স্থান নির্ধারণ নিয়ে সরকারের ‘গড়িমসির’ মধ্যেই গয়েশ্বর চন্দ্র রায়েরও একই বক্তব্য এল।
ঢাকার সমাবেশ থেকে বিএনপি সরকার পতন আন্দোলনের ঘোষণা দেবে কি না- জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, “১০ তারিখ অনেক দূর। ১০ তারিখের সমাবেশে আসবেন। ১০ তারিখের কথা ১০ তারিখেই বলা হবে। আগাম কোনো কথা কেউ বলবে না, আমিও বলব না।
“আমরা ১০ তারিখ পরবর্তী কর্মসূচি তো অবশ্যই দেব। ১০ তারিখ তো আমরা বলবো না যে, খেলা শেষ, এখানে আমাদের আন্দোলন শেষ। ১০ তারিখের আগে যদি সরকার জনগণের দাবি মেনে নেয়, মানে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেয়…।”
ঢাকা জেলা বিএনপির নতুন সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক এবং সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে নেতা-কর্মীদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে যান গয়েশ্বর।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা জেলার সাবেক সভাপতি দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, জেলা সিনিয়র সহসভাপতি শাহ মাইনুল হোসেন বিল্টু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামছুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।