গত ৫ মার্চ আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নাকচ করে এই বিএনপি নেতাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
Published : 10 Mar 2024, 03:06 PM
এক যুগ আগের নাশকতার মামলায় দণ্ড পেয়ে কারাগারে থাকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।
তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস শামছ জগলুল হোসেন তাকে জামিন দেন।
হাফিজের আইনজীবী তাজহরুল ইসলাম তৌহিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে হাফিজ উদ্দিন সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আপিল করেন এবং একই সঙ্গে তিনি জামিন চেয়েও আবেদন করেন। আদালত আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে। শুনানি শেষে বিচারক আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাফিজ উদ্দিনকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন।“
গত ৫ মার্চ হুইল চেয়ারে করে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেছিলেন হাফিজ। সেদিন শুনানি শেষে এ মামলার ২১ মাসের সাজা পাওয়া হাফিজকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক রাজেশ চৌধুরী।
এর আগে ৩ মার্চ আগে দিল্লিতে দুই মাস ধরে হাঁটুর চিকিৎসা করে দেশে ফেরেন বিএনপির এই নেতা। ওইদিনই তার আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিমানবন্দরের ভেতরে অনেকটা সময় লেগে যাওয়ায় সেদিন আর আদালতে যাওয়া হয়নি হাফিজের।
গুলশান থানার নাশকতার মামলায় গত ২৮ ডিসেম্বর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী ।
রায়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং বিএনপির সাবেক নেতা মো. হানিফকে দণ্ডবিধির দুটি ধারায় মোট ২১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়; যা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
অপর পাঁচ আসামি এম এ আউয়াল খান, মো. রাসেল, মঈনুল ইসলাম, বাবুল হোসেন ওরফে বাবু ও আলমগীর বিশ্বাস ওরফে রাজুকে দণ্ডবিধির পৃথক দুই ধারায় মোট ৪২ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে; যা অনাদায়ে তাদের আরও এক মাসের কারাভোগ করতে হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেছিলেন, অভিযোগ সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার বাকি ১১ আসামিকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।
খালাস পাওয়া ১১ জন হলেন- এম এ কাউয়ুম, মো. দুলাল, তোফায়েল আহম্মেদ ওরফে লিটন, জাহাঙ্গীর শিকদার ওরফে বাবু, আরিফুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, সামসুল হক মিয়াজী, বিপ্লব, খুরশিদ আলম মমতাজ, মোশারফ হোসেন ও মাহাবুব।
পরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হন আলতাফ হোসেন । তবে মেজর হাফিজ হাঁটুর চিকিৎসার জন্য দিল্লিতে থাকায় এতদিন তিনি আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের ৪ জুন সন্ধ্যায় গুলশান থানাধীন মহাখালী ওয়্যারলেস গেট পানির ট্যাংকের সামনে রাস্তার ওপর ‘অবৈধ সমাবেশ থেকে হামলা চালিয়ে পুলিশের কাজে বাধা দেন আসামিরা। তারা রাস্তার চলাচলরত গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেন।
২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল গুলশান থানার এসআই কামরুল হাসান তালুকদার আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামালায় আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। মামলার বিচার চলার সময় ১২ সাক্ষীর মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্য নিয়ে এই রায় দিয়েছিল আদালত।
পুরনো খবর:
নতুন দল গড়ার কথা ‘সঠিক নয়’: হাফিজ
নাশকতার মামলায় আলতাফ ও হাফিজসহ ৮ জনের সাজা
বিদেশ যেতে না পেরে বিমানবন্দর থেকে ফিরলেন বিএনপির হাফিজ
দিল্লিতে হাঁটুর অস্ত্রোপচার করিয়ে দেশে ফিরলেন বিএনপির হাফিজ
বিএনপির ভুল ‘অনেক’, সংস্কার দরকার: হাফিজ
রিট আবেদন করার পরদিন দিল্লি গেলেন হাফিজ
মেজর হাফিজের বিদেশ যাত্রায় বাধা চ্যালেঞ্জ হাই কোর্টে