বিএনপির ভুল ‘অনেক’, সংস্কার দরকার: হাফিজ

নতুন দল গঠনের গুঞ্জন উড়িয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “সশস্ত্র প্রতিরোধের সামনে নিরস্ত্র ব্যক্তি কতটুকু করতে পারে?... আমি মনে করি বিএনপির এই নির্বাচনে যাওয়া উচিত।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2023, 01:00 PM
Updated : 8 Nov 2023, 01:00 PM

বিএনপি রাজনীতিতে ‘অনেক ভুল’ করেছে বলে মনে করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। বলেছেন, দলের প্রধানের মতের বাইরে এখানে ‘কিছু বলা যায় না’। ‘ইয়েস স্যার, রাইট স্যার ছাড়া আর কোনো কিছুই জানেন না।’

‘ভুল থেকে বের হয়ে আসতে’ সংস্কারের তাগিদও দিয়েছেন তিনি।

২০১৪ সালের নির্বাচনে না যাওয়া ‘ভুল ছিল’ মনে করা এই নেতা বলেছেন, তিনি চান বিএনপি এবার ভোটে আসুক। এই মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ‘জোর না দিয়ে’ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় বিএনপির ভোটে আসাতেই জোর দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে হাফিজউদ্দিনের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটিও উড়িয়ে দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর নানা জল্পনা কল্পনার মধ্যে বুধবার ঢাকার বনানীর বাসায় সাংবাদিকদের ডেকে হাফিজ উদ্দিন বলেন, নতুন দল গড়ার যে কথা বাজারে আছে, তা ‘সঠিক নয়’। তার শরীর ভালো নয়, দেশের বাইরে চলে যাবেন। তবে বিএনপি থেকেই তিনি অবসরে যেতে চান।

মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন ‘জেড’ ফোর্সে ছিলেন হাফিজ উদ্দিন। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্যে তিনি বীর বিক্রম খেতাব পান।

সামরিক বাহিনী থেকে অবসরের পর রাজনীতিতে যুক্ত হন হাফিজ। ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

২০০১ সালে খালেদা জিয়া সরকার গঠন করলে হাফিজকে পানিসম্পদমন্ত্রী করেন। এক যুগের বেশি সময় ধরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সরকারবিরোধী আন্দোলনে তাকে কারাগারেও যেতে হয়েছে।

কী ‘ভুল’ বিএনপির?

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ প্রথমেই তোলেন ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের প্রসঙ্গ।

তিনি বলেন, “২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ করা ‘উচিত ছিল’।”

কেন এমনটি মনে করেন সেই ‘ব্যাখ্যায়’ তিনি বলেন “সে সময় আওয়ামী লীগ লেজে গোবরে ছিল, প্রধানমন্ত্রী আমাদের নেত্রীকে আহ্বান করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় দেওয়ার জন্যে।

“কখন তারা এরকম আহ্বান জানায়? যখন লেজেগোবরে অবস্থা। এখন কি জানায়? আমরা সেই অবস্থার ফায়দা নিতে পারিনি। তার পরে যে রাজপথ অনুসরণ করেছি, সেই যে রাজপথে গিয়েছি, এখানও রাজপথে আছি।”

২০১১ সালে উচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণার পর জাতীয় সংসদ নির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে।

বিএনপি-জামায়াত জোট এর প্রতিবাদে আন্দোলনে যায়। নির্বাচন বর্জন করে টানা কর্মসূচি পালন করে। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যেও নির্বাচন ঠেকানো যায়নি। অর্ধেক আসনে প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।

বিরোধী দলের বর্জনের মুখে এর আগেও দেশে দুইবার নির্বাচন হয়। এরশাদ শাসনামলে ১৯৮৮ সালে এবং খালেদা জিয়ার আমলে ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারির সেই ভোটের পর সরকার টিকতে পারেনি। তবে ২০১৪ সালের ভোটের পর আওয়ামী লীগের সরকার মেয়াদ পূরণ করে।

সেই নির্বাচনের আগে হরতাল প্রত্যাহার করে আলোচনায় যেতে খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু বিএনপি নেত্রী সাড়া দেননি।

সেই নির্বাচনের পর থেকেই রাজনীতিতে দৃশ্যত একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে আওয়ামী লীগের। বিএনপি ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আর পায়নি।

এরপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে ওই নির্বাচনে প্রথমে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি। পরে ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি নতুন জোট ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে তাতে অংশ নেয়। সে নির্বাচনে ভরাডুবির পর ‘আগের রাতে ভোট হয়ে যাওয়ার’ অভিযোগ আনে বিএনপি।

এবার ভোটের আগে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি রাজপথে আন্দোলনে রয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের মধ্যে তাদের সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন পর দেশে হরতাল-অবরোধের মত কর্মসূচি ফিরিয়ে এনেছে দলটি।

হাফিজ বলেন, “জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে বিএনপি ক্ষমতার বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। অনেকগুলো ভুল আমরা করেছি। সেই ভুল ডিসকাস করার ফোরাম এটা না। প্রকাশ্যে এটা বলা উচিত না। কিন্তু আমার তো কোনো ফোরাম নাই, দলে কোনো অবস্থা নাই।

“গত ৮ বছর দলের কোনো কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি। নেতা নির্বাচন করার সুযোগ নাই, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজনীতি করার সুযোগ নাই, বক্তব্য রাখারও সুযোগ নাই।

“তিন বছর আগে আমি এই ছাদের ওপরে সাংবাদিক সম্মেলনে একটা কথা বলেছিলাম যে, আমার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। আমি মুখ ও বধির স্কুলের ছাত্র না। সুতরাং একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কিছু কিছু কথা বলতেই হয় জাতির স্বার্থে। আমার কাছে দেশ সবার উপরে।”

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান, দুজনই তার নেতা এবং দুজনকেই ‘সম্মান করেন’ জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, “কিছু ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া দরকার।

“আওয়ামী লীগেরটা জানি না, কখনো আওয়ামী লীগ করি নাই, বিএনপিতে সত্যি কথা বলার মত কোনো লোক, বিশেষ করে চেয়ারপারসনের সামনে সত্যি কথা বলার মত লোক আমার চোখে পড়ে নাই।

“অনেক আগে সাইফুর রহমান সাহেব বলতেন। তিনি একজন ত্যাগী নেতা। তাকে দুই-চারবার সত্যি কথা বলতে দেখেছি। এছাড়া সবাই ইয়েস স্যার, রাইট স্যার ছাড়া আর কোনো কিছুই জানেন না; এটা হল বাস্তবতা।”

‘সংস্কার করুন’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে এই আহ্বান জানান হাফিজ উদ্দিন। বলেছেন, “এখন যেভাবে চলে সেভাবে কোনো রাজনৈতিক দল চলতে পারে না। রাজনৈতিক দলের কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটি করবে, কেন্দ্রীয় কমিটি জেলা কমিটি করবে, জেলা কমিটি উপজেলা কমিটি করবে, উপজেলা কমিটি ইউনিয়ন কমিটি করবে, ইউনিয়ন কমিটি ওয়ার্ড কমিটি করবে– সারা পৃথিবীতে এ রকম সিস্টেম।”

এরকম ব্যবস্থা জিয়ার সময়ে ছিল জানিয়ে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, “আমরা কেন সেই পথ থেকে বিচ্যুত হলাম, কেন দলে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হল, কেন কমিটি বাণিজ্য হচ্ছে, কেন ত্যাগী নেতারা নির্বাসিত?

“খুলনার নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সিলেটের আরিফুল হক চৌধুরী, বরিশালের মজিবুর রহমান সরওয়ার, এরা তো ত্যাগী নেতা। ভুল ত্রুটি থাকতেই পারে। আমি জনাব তারেক রহমানকে বলব, এই দলে সবাই আপনার অনুসারী, আপনি সবার শ্রদ্ধার পাত্র।”

দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে এক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় ২০২০ সালে তাকে ও আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শানোর নোটিস নিয়েও কথা বলেন হাফিজ।

তিনি বলেন, “১১টি অভিযোগ ছিল আমার বিরুদ্ধে। আমি সক্রিয় না, আমি দলে কোনো কাজ করি না, সংস্কারপন্থি, আমি নেতা-কর্মীদের ওপর জুলুম করি... এ রকম ১১টি আজগুবি অভিযোগ ছিল।

“একটি ছিল যে, আমি জনাব শওকত মাহমুদের (বহিষ্কৃত) সাথে বিজয়নগর, তোপখানা রোড, হাই কোর্টের সামনে সরকারবিরোধী মিছিলে অংশগ্রহণ করেছি।

“আমরা বিরোধী দল, সরকারবিরোধী মিছিলে অংশগ্রহণ করতেই পারি, কিন্তু আমি এসব মিছিলে কখনই ছিলাম না। এটা আমি ডিজার্ভ করি না, যে কাজ করি নাই সেসব কাজে যদি আমাকে অভিযুক্ত করা হয়, এই ৩১ বছর বিএনপি করার পর, বিশেষ করে জিয়াউর রহমানের একজন সৈনিক হিসেবে এটি আমার জন্য অত্যন্ত পীড়াদায়ক।”

‘জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে’ ১৯৯২ সালে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার কথা তুলে ধরে হাফিজ উদ্দিন বলেন, “গত ২৩ বছর ধরে আমি এই দলের ভাইস চেয়ারম্যান। স্থায়ী কমিটিতে যত সদস্য আছেন, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ছাড়া বাকি সবাই আমার নিচের পদে ছিলেন, আমি যখন ১৯৯২ সালে ভাইস চেয়ারম্যান।

“একে একে তারা সবাই আমাকে অতিক্রম করে আমার উপরে চলে গেছেন। এতে আমার কোনো অসুবিধা নাই। পদবির জন্য তো রাজনীতি করি না। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে আমি নানা ধরনের অসুবিধা সম্মুখীন হচ্ছি।”

বিএনপির ভোটে যাওয়া উচিত’

২০১৪ সালের মতো ‘ভুল’ আর দেখতে চান না হাফিজ উদ্দিন। তিনি বলেন, “আমি মনে করি বিএনপির এই নির্বাচনে যাওয়া উচিত। বিএনপিতে অসংখ্য ত্যাগী নেতা-কর্মী রয়েছে, তারা প্রাণপণ চেষ্টা করেছে, কিন্তু বাস্তবতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।”

আন্দোলন করে বিএনপি সফল হতে পারবে না বলেও মনে করেন তিনি। বলেন, “বিএনপির সকল ত্যাগী নেতা-কর্মীর প্রতি অভিনন্দন জানাই। তারা রাজপথে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু সশস্ত্র প্রতিরোধের সামনে নিরস্ত্র ব্যক্তি কতটুকু করতে পারে? তবু তাদের অনেকে জীবন দিয়ে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করেছেন, তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। জনাব তারেক রহমানের প্রতি সন্মান জানাই।

“কিন্তু এই দেশ এইভাবে জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হতে পারে না। শ্রীলঙ্কা খারাপ হয়ে তারা আবার সামলে নিয়েছে। আমরা সামলাতে পারব কিনা জানি না। যদি এ দেশের অবস্থা আরো খারাপ হয়, এজন্য প্রধান দুই রাজনৈতিক দল, তারাই দায়ী থাকবে।”

‘তত্ত্বাবধায়ক না, আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় জোর দিক’

এই মুহূর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওপর জোর না দিয়ে বিএনপির এখন ‘বিকল্প সমাধান’ খোঁজা উচিত বলে মনে করেন হাফিজ।

বিএনপি নেতা অবশ্য এও মনে করেন যে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তা সুষ্ঠু হওয়ার ‘সুযোগ নেই’। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হবে না, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের অধীনেও হবে না।”

বিকল্প কী হতে পারে, তাও জানিয়েছেন বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, “আমি মনে করি আগামী নির্বাচনে বিএনপি যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থায়… সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহের মধ্যস্থতা পেলে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত।

“বিএনপিকে অনুরোধ জানাই, কীভাবে সমঝোতার রাজনীতির মাধ্যমে আমরা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন পেতে পারি। আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহকে অনুরোধ জানাব, আপনারা মধ্যস্থতা করুন।…জাতিসংঘ অনেক দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে থাকে। আমরা জাতিসংঘের তদারকিতে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই। নইলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।”

বিএনপিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল দাবি করে তিনি বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপিই ক্ষমতায় আসবে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিও অনুরোধ ছিল হাফিজের। তিনি বলেন, “এ দেশের একজন ক্ষুদ্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে একটা অনুরোধ তার কাছে রাখতে চাই, আপনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, দেশের অনেক উন্নয়ন কাজ করেছেন। এখন অনুগ্রহ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সম্প্রীতির কারণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।

“আপনি আপনার মহান পিতার পথ অনুসরণ করে পদের তোয়াক্কা না করে একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তার আগে বিএনপির সাথে বা অন্য কোনো দল, যার সংসদে প্রতিনিধিত্ব আছে, তাদের সঙ্গে বসে নির্বাচনের একটা পরিবেশ এনে দিন।”

এর মাধ্যমে সংঘাতের রাজনীতির অবসান হবে বলেও আশাবাদী হাফিজ উদ্দিন।

নতুন দলের খবর ‘সঠিক নয়’

গত ছরের ১০ ডিসেম্বর গোলাপবাগে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশের দিন সেখানে উপস্থিত থাকলেও এরপর থেকে রাজনীতি থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছেন বলেও জানান হাফিজ উদ্দিন।

তিনি বলেন, “তথ্যমন্ত্রী যে বক্তব্য দিলেন, যে আমি একটি নতুন দল করতে যাচ্ছি, এটি সঠিক নয়। আমি এখন কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত নই।”

এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ তিনিন, “বিএনপি যদি নির্বাচন করে, আমি বিএনপির হয়েই নির্বাচন করব। এছাড়া আমার অন্য কোনো বক্তব্য নেই। এখানো বিএনপিতে আছি…, বিএনপিতে থাকব বলে আশা করি।

“আমি ৩১ বছর বিএনপির রাজনীতি করছি, ৩১ বছর একটানাভাবে এই দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছি। এখন আমি অসুস্থ। আর আমার পক্ষে… আমি শিগগিরই বিদেশে যাব। আগামী নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করা হয়ত আমার পক্ষে সম্ভব হবে না।”

রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছার কথাও জানান বিএনপির সাবেক মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “রাজনীতি করার সেই শারীরিক সামর্থ্য আমার নেই। শিগগিরই অবসর গ্রহণ করব। আমার এলাকাবাসীর (ভোলা) মতামত নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”

চিকিৎসার জন্য তিনি সিঙ্গাপুরে যেতে চান। সেজন্য ভিসার আবেদন করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয়। এখন আমার অগ্রাধিকার হল শারীরিক সুস্থতা লাভ করা, চিকিৎসা গ্রহণ করা। রাজনীতির প্রতি কোনো আগ্রহ আমার অবশিষ্ট নাই।”