গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখনও তিনজনের এ পদ পাওয়ার সুযোগ আছে।
Published : 27 Feb 2024, 11:39 PM
কুড়িগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান এবং বগুড়া-২ আসনের শরিফুল ইসলাম জিন্নাহকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করেছে জাতীয় পার্টি।
দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পাওয়া ক্ষমতাবলে চেয়ারম্যান জি এম কাদের এ মনোনয়ন দিয়েছেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দলটির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের পার্টির গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে চেয়ারম্যানের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম জিন্নাহকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন।”
জাতীয় পার্টি নিয়ে জিএম কাদের ও রওশনপন্থিদের বিরোধের মধ্যে ৭ জানুয়ারির ভোটে নির্বাচিত এ দুই সংসদ সদস্যকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করার ঘোষণা এল।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য জাতীয় পার্টি যে ২৮৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে, তাতে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ও তার ছেলে রাহগির আলমাহি এরশাদের (সাদ এরশাদ) নাম ছিল না। তবে রওশনের জন্য ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসন ফাঁকা রাখা হয়েছিল। এর বাইরে রওশন অনুসারীদের কাউকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
এ নিয়ে বিরোধের মধ্যে ভোটের পর ১২ জানুয়ারি রওশনপন্থি হিসেবে পরিচিত দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়কে দলের সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একদিন বাদে অব্যাহতি পান দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াহ ইয়া চৌধুরী ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মো. শফিকুল ইসলাম।
এরপর ২২ জানুয়ারি দলীয় ঐক্যের স্বার্থে অব্যাহতিপ্রাপ্ত ও বহিষ্কৃতদের স্ব স্ব পদে ফেরানোর আহ্বান জানান জাপা প্রতিষ্ঠাতা এইচএম এরশাদের স্ত্রী রওশন। তাতে কাজ না হলে দুদিন বাদে শফিকুল, ইয়াহিয়াসহ অব্যাহতিপ্রাপ্ত বেশ কয়েকজনের নেতৃত্বে ৬৬৮ নেতাকর্মী ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। কারণ হিসেবে তারা জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ আনেন।
দুদিন বাদে এক মতবিনিময় সভায় রওশন এরশাদ নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করে বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে ‘অব্যাহতি’ দেন। তবে রওশনের ওই দাবি ‘আমলে নেননি’ জিএম কাদের বা চুন্নু। ওই দিনই রওশনপন্থি হিসেবে পরিচিত কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এরমধ্যে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে জিএম কাদেরকে এবং উপনেতা হিসেবে কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে স্বীকৃতি দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এই পরিস্থিতিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি গুলশানের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণাকারী রওশন এরশাদ। সেখান থেকে আগামী ৯ মার্চ জাতীয় সম্মেলনের ডাক দেন তিনি।
ভাবির সঙ্গে চলমান বিবাদের মধ্যেই মঙ্গলবার দুজনকে প্রেসিডিয়াম সদস্য মনোনীত করলেন দেবর জি এম কাদের। তাতে দলে প্রেসিডিয়াম সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ৩৮-এ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখনও তিনজনের এ পদ পাওয়ার সুযোগ আছে।
আরও পড়ুন:
জাপার রওশনপন্থিদের সম্মেলন পিছিয়ে ৯ মার্চ
জিএম কাদের বিরোধী দলীয় নেতা, আনিসুল ইসলাম উপনেতা
রওশনের পাশে দাঁড়ানো বাবলাকে বাদ দিলেন জিএম কাদের
‘অব্যাহতির’ ঘোষণা আমলে নিচ্ছেন না চুন্নু
নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা রওশনের
কাদের-চুন্নুর ‘স্বেচ্ছাচারিতা’: একযোগে জাপার ৬৬৮ জনের পদত্যাগের ঘোষণা
অব্যাহতিপ্রাপ্ত ও বহিষ্কৃতদের ফেরানোর আহ্বান রওশনের
জাতীয় পার্টি থেকে বাদ কাজী ফিরোজ ও সুনীল শুভরায়