বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের এ অবস্থান তুলে ধরেন।
Published : 24 Aug 2022, 08:07 PM
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেড়শ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে ব্যালট ব্যবহারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার দুপুরে ঢাকার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে দলের এমন অবস্থান তুলে ধরেন।
ফখরুল বলেন, “এই নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র সরকারের ইচ্ছা পালন করবার জন্য, তাদের যে লক্ষ্য আছে সরকার গঠন করবার, সেই লক্ষ্যকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার জন্যই ইসি ইভিএমের কথা আবারও বলেছে।”
ভোটে ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারে ইসির সিদ্ধান্ত নাকচ করে তিনি বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা কখনই জনগণ গ্রহণ করবে না, আমরাও গ্রহণ করছি না। এটাকে পুরোপুরিভাবে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।”
একই সঙ্গে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ভোট আয়োজনের দাবি তুলে তিনি বলেন, “বিএনপির দাবি খুব পরিস্কার, বিএনপির দাবি হচ্ছে যে, নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নির্দলীয় সরকার ছাড়া এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
‘‘... সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন করে গঠিত নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন সকল দলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা পার্লামেন্ট নির্বাচন করতে হবে এবং জনগণের সরকার গঠন করতে হবে। ভোট হবে সম্পূর্ণ ব্যালেটে।”
বর্তমান নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ”...আজকে প্রমাণিত হল যে, এই নির্বাচন কমিশনও যে এই সরকারেরই একটা অঙ্গ সংগঠন। কারণ ওরা (আওয়ামী লীগ) তিনশ আসনে ইভিএম চেয়েছে। আর ওরা (নির্বাচন কমিশন) এখন অফার করেছে দেড়শতে। একটা রফা-কম্প্রোমাইজ সরকারের সঙ্গে।”
ইভিএম দিয়ে জনগণের রায় ‘সঠিকভাবে প্রতিফলিত’ হবে না দাবি করে তিনি বলেন, “সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো এমনকি জাতীয় পার্টি পর্যন্ত সবাই গিয়ে বলে এসেছিল যে, আমরা ইভিএম চাই না। কারণ ইভিএম দিয়ে জনগণের রায় সঠিকভাবে প্রতিফলিত হবে না।
“তারপরেও বর্তমান যে নির্বাচন কমিশন করা হয়েছে যেটাকে আমরা বলি যে, অবৈধ নির্বাচন কমিশন। কারণ এই কমিশন গঠন করাও সঠিক পদ্ধতিতে হয়নি।”
আগের দিন মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, “কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে- অনূধর্ব দেড়শটি আসনে ইভিএমে নির্বাচন করা হবে। ন্যূনতম একটি আসনেও হতে পারে। সব কিছু বিচার-বিশ্লেষন করে কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনের আগে দুপুর ১টায় মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফলভাবে পালনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। দিবসটি পালনে বিএনপি দুই দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, নেওয়াজ হালিমা আরলি ও তাইফুল ইসলাম টিপু, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল হক, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু ও মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান ও আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ ও হেলেন জেরিন খান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান ও শফিকুল ইসলাম মিলন, তাঁতী দলের আবদুল কালাম আজাদ ও মজিবুর রহমান মুজিব, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন ও মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, উলামা দলের নুজরুল ইসলাম তালুকদার ও সেলিম রেজা, জাসাসের লিয়াকত আলী ও জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
দেড়শ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ইসির নিজস্ব: সিইসি