ভুল বোঝাবুঝির ‘অবসানে’ লম্বা সময় বৈঠক করলেন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ ও চেয়ারম্যান জি এম কাদের, একসঙ্গে নাস্তাও করলেন।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকার হোটেল ওয়েস্টিনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয় বলে জানান পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু।
দীর্ঘ পাঁচ মাস চিকিৎসা শেষে গত রোববার থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফেরেন রওশান এরশাদ। সেদিন তিনি জানিয়েছিলেন, দ্বন্দ্ব দূর করতে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
দেশে ফিরে রওশন হোটেল ওয়েস্টিনেই থাকছেন। মঙ্গলবার সেখানেই দেখা করতে যান তার দেবর জি এম কাদের।
পার্টির কো চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু হোসেন বাবলা, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম সেন্টু এবং রওশন এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুল ইসলাম সেন্টু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সঙ্গে এক টেবিলে রাস্তা করেছেন। এ সময় তাদের মধ্যে প্রায় ৫৫ মিনিটের বৈঠক হয়েছে।
“অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। এরপর আশা করা যায়, দলের মধ্যে সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়ে যাবে। দল এখন চাঙ্গা হবে বলেই আমরা মনে করি। এ জন্য দলের চেয়ারম্যান পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেছেন। আমরা দলের নেতাকর্মীরাও চেয়েছিলাম দলের এই ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক।”
কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে– এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দলের শীর্ষ দুই নেতা দলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া রওশন এরশাদের শারীরিক বিষয়ে জানতে চেয়েছেন জি এম কাদের।
২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির কর্তৃত্ব নিয়ে রওশনের সঙ্গে দেবর কাদেরের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছিল, পরে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যস্থতায় সমঝোতা হয় দুজনের।
তারপর কাদের দলের চেয়ারম্যান হন, আর রওশন হন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা। তিন বছর পর থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন রওশন এরশাদের নামে গত ৩০ অগাস্ট আকস্মিকভাবে দলের কাউন্সিল ডাকা হয়। এর পাল্টায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরাও রওশনকে বাদ দিয়ে কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা করতে সেপ্টেম্বরের শুরুতে চিঠি দেন স্পিকারকে।
দলে বিবাদের মধ্যে গত ১৪ সেপ্টেম্বর কোনো কারণ উল্লেখ না করে মসিউর রহমান রাঙ্গাঁকে দলের সভাপতিমণ্ডলীসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জাতীয় পার্টি।
প্রায় দুই মাস পার হলেও জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা করার প্রশ্নে স্পিকারের কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় ৩০ অক্টোবর দলটি সংসদ বর্জনের সিদ্ধান্ত জানায়।
বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে গেজেট প্রকাশ না করা পর্যন্ত তারা সংসদে যোগ দেবেন বললেও অবশ্য পরদিনই সংসদ অধিবেশনে তাদের দেখা যায়।
আরও পড়ুন: