জাতীয় পার্টিতে ভাঙনের নতুন গুঞ্জনের মধ্যে দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, তার দল আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ‘ঐক্যবদ্ধ’।
দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ কাউন্সিল ডেকে চিঠি পাঠানোর পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই দাবি করেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, “জাতীয় পার্টি এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত। কোনো ষড়যন্ত্রই জাতীয় পার্টির ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি করতে পারবে না। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সৈনিকেরা ষড়যন্ত্রে কখনোই বিভ্রান্ত হবে না।”
কী ষড়যন্ত্র, কারা করছে, সে বিষয়ে বক্তব্যে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
তবে কাদেরকে উপেক্ষা করে বুধবার রওশন যে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাকে জাতীয় পার্টিতে নতুন করে ভাঙনের আভাস দেখছেন রাজনৈতিক মহলে অনেকেই।
এরশাদের গড়া দল জাতীয় পার্টি ভেঙেছে বেশ কয়েকবার। দলটির সাবেক মহাসচিবদের নেতৃত্বে আলাদা কয়েকটি দল এখনও সক্রিয় রয়েছে।
তিন বছর আগে এরশাদের মৃত্যুর পর দলে কর্তৃত্ব নিয়ে দেবর-ভাবি কাদের ও রওশনের বিরোধে দলটি আবার ভাঙনের মুখে পড়েছিল। তখন জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে সমঝোতা হয়।
সেই সমঝোতায় রওশনকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পাশাপাশি দলে প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পদ দেওয়া হয়। আর কাদের দলের চেয়ারম্যানের পদ রাখার পাশাপাশি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার আসন নেন।
অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন বিদেশে থাকা রওশন গত বছর দেশে ফিরে দল নিয়ে নিজের ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন। বুধবার তার নামে আসা চিঠিতে আগামী নভেম্বর মাসে দলের কাউন্সিল ডাকা হয়।
এরপর কাদেরের পক্ষে তার প্রেস সচিব বিবৃতি দিয়ে বলেন, জাতীয় পার্টিতে চেয়ারম্যান ছাড়া আর কারও কাউন্সিলর ডাকার এখতিয়ার নেই। রওশনের ওই পদক্ষেপ ‘অবৈধ’।
রওশন কাউন্সিলের প্রস্তুতির জন্য নিজেই আহ্বায়ক হয়ে কমিটি গঠনের কথা জানান চিঠিতে। দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ ছয়জন কো-চেয়ারম্যানকে করেন যুগ্ম-আহ্বায়ককে।
তবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সচিবের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, মহাসচিব চুন্নুসহ কো চেয়ারম্যানরা ওই কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির বিষয়ে কিছু জানেন না।
বৃহস্পতিবার দলের মহাসচিব চুন্নুর জন্মদিন উপলক্ষে বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এসে কাদের ষড়যন্ত্র ও ঐক্য নিয়ে কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে কাদের আরও বলেন, “কোনো ষড়যন্ত্রে মাথা নত করবে না জাতীয় পার্টি। সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে আমরা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব। গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে যাবে জাতীয় পার্টি।”
জাতীয় পার্টি এক সময় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে থাকলেও আগামী নির্বাচন এককভাবে করার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে।