রাতের চাইতে দিনেই খেতে হবে বেশি।
ওজন কমানোর যাত্রায় জীবনযাপনের সব বিষয়েই নজর দিতে হয়। ডায়েট আর শরীরচর্চা ছাড়াও নিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুমের পাশাপাশি আরেকটি বিষয়ের ওপর নজর দিতে হয়, সেটা হল কোন সময়ে খাওয়া হবে আর কোন সময় কম খেয়ে থাকতে হবে।
নিউ ইয়র্ক’য়ের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ মেলিসা মিট্রি এই বিষয়ে বলেন, “দেহ ফলপ্রসুভাবে খাবার হজম করতে পারে দিনের প্রথম ভাগে। এই সময়ে খাবার দেহে চর্বি হিসেবে জমে না থেকে শক্তিতেই খরচ হয় বেশি।”
“এর প্রধান কারণ হল, হরমন। ধরা যাক ইন্সুলিন, এটা দিনের প্রথমভাগেই বেশি কর্মক্ষম থাকে। আর সেটা জৈবিক ঘড়ির ওপর নির্ভরশীল।” ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যাখ্যা করেন এই পুষ্টিবিদ।
খাওয়া ও না খাওয়ার সময় নির্ধারন
মিট্রি নির্দিষ্ট করে বলেন, “সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত হল খাওয়ার সেরা সময়।”
‘জামা ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল’য়ে প্রকাশিত, বার্মিংহামের ‘ইউনিভার্সিটি অফ অ্যালবামা’, পাকিস্তানের ‘হাবিব ইউনিভার্সিটি’ ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যানসাস মেডিকেল সেন্টার’য়ের করা গবেষণার বরাত দিয়ে এই পুষ্টিবিদ জানান, এই সময়ের মধ্যে ধীরে একাকী খাওয়র ফলে ওজন কমানো যায় দ্রুত, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মেজাজের উন্নতি ঘটে।
যদিও বেলা ৩টার মধ্যে খাওয়া শেষ করে মুখ বন্ধ রাখা খুবই কষ্টকর। তাই এই পুষ্টিবিদের পরামর্শ হল প্রতিদিন আগেভাগে ভারী খাবার খেয়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে।
তিনি বলেন, “সময় নির্দিষ্ট না করে বরং প্রয়োজনীয় ক্যালরি গ্রহণের সময় সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে শেষ করাই হবে ভালো উপায়। তাহলে পরের ১২ঘন্টা দেহের মেটাবলিজম বা জৈবিক প্রক্রিয়া বিশ্রাম পাবে।”
এই রাতের সময়টা না খেয়ে থাকার ফলে দেখা গেছে, ওজন কমানোর যাত্রা দ্রুত হয়েছে সবসময়ই।
সকালের নাস্তায় বেশি ক্যালরি গ্রহণ
ওজন কমানোর গতি কতটা দ্রুত হতে পারে তা অনেকটাই নির্ভর করে দিনের কোনভাগে কী খাওয়া হচ্ছে সেটার ওপর।
পাবমেড জার্নালে প্রকাশিত, স্পেনের ‘ইউনিভার্সিটি অফ মুর্সিয়া’র করা গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, রাতের চাইতে সকালের নাস্তায় ক্যালরি বেশি গ্রহণ করলে ওজন বেশি মাত্রায় কমানো যায়।
মিট্রি এই গবেষণার সূত্র ধরে বলেন, “দিনের প্রথমভাগে বেশি মাত্রায় প্রোটিন গ্রহণ করলে সারাদিন খিদা লাগে কম। ফলে খাওয়ার মাত্রা কমে। তাছাড়া রাতের চাইতে দিনের বেলাতেই ক্যালরি খরচ হয় বেশি। তাই দিনে বেশি খাওয়া প্রয়োজন। রাতে বেশি খেলে সেটা শরীরেই জমা হবে।”
প্রোটিনের দিকেই নজর দিতে হবে
“প্রোটিন সমৃদ্ধ সকালের নাস্তা হিসেবে ওমলেট বা ডিম সঙ্গে টক দই ও ফল খাওয়া উপকারী। প্রতি বেলার খাবারে প্রোটিন ধরনের খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তবে সকালের দিকে যত প্রোটিন খাওয়া যাবে ততই মঙ্গল।”
দিনের বাকি সময়টাতে বেছে নেওয়া যেতে পারে- মাছ, মুরগির মাংস, বীজ ও বাদাম, ডাল, ফল এবং কম চর্বির দুগ্ধজাত খাবার। আর এসবই প্রোটিনের দারুণ উৎস।
আরও পড়ুন