প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া আর সম্পূরক গ্রহণ এক নয়

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া বিকল্প হিসেবে ‘প্রোটিন পাউডার’ বা ‘প্রোটিন বার’ গ্রহণ করা ঠিক না।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2023, 01:54 PM
Updated : 14 May 2023, 01:54 PM

প্রোটিন দেহের অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড সরবারহ করে যা কোষের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

তবে প্রোটিনের ভূমিকা নির্ভর করে প্রাকৃতিক না-কি সম্পূরক উৎস থেকে গ্রহণ করা হয়েছে এর ওপর।

সুস্থ থাকতে প্রোটিন গ্রহণের বিকল্প নেই। দৈনিক শরীরচর্চা করার মতোই প্রোটিন গ্রহণ করা সমান গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের নিবন্ধিত পুষ্টি-প্রশিক্ষক তানিসা বাওয়া হেলদিশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “প্রোটিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট’ যা কোষের বৃদ্ধি ও শরীর সক্রিয় রাখতে সহায়তা করে। এটা অ্যামিনো অ্যাসিডে তৈরি যা ভাঙনের মাধ্যমে দেহের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে পেশি সুগঠিত করে।”  

তিনি আরও বলেন, “তবে খাবার থেকে গ্রহণ করা প্রোটিন এবং সম্পূরক থেকে গ্রহণ করার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।”

দৈনিক যতটা প্রোটিন প্রয়োজন

ব্যক্তিভেদে প্রোটিন গ্রহণের আদর্শ মাত্রার তারতম্য ঘটে থাকে। বয়স, লিঙ্গ, ওজন এবং কাজের ধরন অনুযায়ী প্রোটিন গ্রহণ করতে হয়।

স্বাভাবিকভাবে, প্রাপ্ত বয়স্কদের ৪৬ থেকে ৬৩ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা আদর্শ। আর গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের ৬৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ আদর্শ।

প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রোটিন গ্রহণ

বাওয়া বলেন, “প্রোটিন অ্যামিনো অ্যাসিডে তৈরি এবং মোট অ্যামিনো অ্যাসিডের সংখ্যা ২০টি। যেহেতু শরীর আটটি অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করতে পারে না তাই বাইরের উৎস থেকে এগুলো সংগ্রহ করতে হয়। এগুলো ‘এসেনশল অ্যামিনো অ্যাসিড’ হিসেবে পরিচিত।”

আর দুই ধরনের উৎস থেকে প্রাকৃতিক ভাবে প্রোটিন গ্রহণ করা যায়।

প্রাণিজ প্রোটিন

বাওয়া জানান, “আটটি অত্যাবশকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড মূলত প্রাণিজ প্রোটিন। ঘাস খায় এমন প্রাণীর মাংস, চারণভূমিতে বেড়ে ওঠে এমন প্রাণীর ডিম, বন্য মাছ ইত্যাদি হরমোনের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে।”

উদ্ভিজ্জ প্রোটিন

এই বিশেষজ্ঞ জানান, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন দুই ভাগে বিভক্ত।

* নির্দিষ্ট কিছু খাবার যেমন- স্পিরুলিনা, হেম্প, সয়া, ডালজাতীয় খাবার, গমের ময়দা ইত্যাদিতে এই আটটি অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, এগুলোকে বলা হয় সম্পূর্ণ প্রোটিন।

* অসম্পূর্ণ প্রোটিনগুলোকে অন্যান্য উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের সঙ্গে মিলে প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড অর্জন করতে হয়। বাদামি চাল, মটরশুঁটি, ছোলা, তাহিনি ইত্যাদি এই ধরনের প্রোটিন।

যদিও এগুলো এক সঙ্গে খাওয়া যায় না। তবে চাইলে একই দিনে এগুলো খাওয়া যেতে পারে।

‘প্রোটিন পাউডার’ বা সম্পূরক থেকে প্রোটিন গ্রহণ

গুঁড়া বা ‘বার’ ইত্যাদি আকারে প্রোটিন পাওয়া যায়। এগুলো দেহে দ্রুত প্রোটিন সরবারহ করে। এগুলো অন্যান্য ভিটামিন সম্পূরকের মতোই প্রক্রিয়াজাত উপায়ে থাকে।

বাওয়ার মতে, “আমিষ-ভোজীরা খাবার থেকে পর্যাপ্ত আমিষ পেতে পারেন বলে তাদের সম্পূরক গ্রহণের প্রয়োজন নেই। তবে যারা নিরামিষভোজী তাদের দেহের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সম্পূরক প্রোটিন গ্রহণ উপকারী।”

ঘোল, বাদামি চাল, মটর ইত্যাদির প্রোটিনের গুঁড়া খাওয়া ব্যাপকভাবে প্রচলিত।

বাদামি চালের প্রোটিনের আছে উচ্চ মাত্রার আর্সেনিক উপাদান, যা দেহের জন্য নিরাপদ নয়। হুই প্রোটিনে আছে সয়া লেক্টিন্স যা অন্ত্রে প্রদাহ বাড়ায়। তাই এটা না খাওয়াই ভালো।

সবচেয়ে নিরাপদ প্রোটিন হল সবুজ মটরের প্রোটিন পাউডার। এটা স্বচ্ছ প্রোটিন সম্পূরক।

সতর্কতা

পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সম্পূরক প্রোটিন গ্রহণ না করাই ভালো।

আরও পড়ুন

যথেষ্ট প্রোটিন পাচ্ছেন তো!

Also Read: প্রোটিন নিয়ে ভুল ধারণা

Also Read: প্রোটিন গ্রহণ কম বা বেশি: দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য অপকারী