কোয়ের্সেটিন সমৃদ্ধ খাবারে বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

উদ্ভিজ্জ খাবার খেয়েও রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2023, 01:24 PM
Updated : 20 Jan 2023, 01:24 PM

ভিটামিন সি ছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর আরও উপাদান রয়েছে।

এই শীতে এক কাপ গরম চায়ে চুমুক দেওয়ার মতো সুখ যেমন ফিরে আসে তেমনি সঙ্গে আনে জ্বর কাশি সর্দির সমস্যা।

আর এসব থেকে রক্ষা পেতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে ভিটামিন সি সমৃ্দ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া প্রোটিন, চর্বি, কর্বোহাইড্রেইট’য়ের সমন্বয়ে সুষম খাবার খাওয়াও জরুরি।

পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুম ও শরীরচর্চার বিষয়-তো রয়েছেই। 

তবে উদ্ভিজ্জ খাবারের কথা যখন আসবে তখনই পাওয়া যাবে নানান ধরনের উপাদানের নাম।

রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নিবাসী পুষ্টিবিদ ক্রিস্টিনা ম্যানিয়ান লেখেন, “উদ্ভিজ্জ বিভিন্ন যৌগের মধ্যে রয়েছে- ফাইটোকেমিকেল, ফেনোলিক কম্পাউন্ড, পলিফেনল্স বা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস। এরকম প্রায় ৮ হাজার যৌগিক উপাদানের খবর বের করতে পেরেছে বিজ্ঞানীরা। আর প্রতিটির রয়েছে আলাদা আলাদ স্বাস্থ্যোপকারিতা।”

তিনি আরও লেখেন, আর এসবের বিভিন্ন শ্রেণী ও উপ-শ্রেণী রয়েছে। ফ্লাভানয়েড শ্রেণীর ফ্লাভানল উপ-শ্রেণীর মধ্যেই পড়ে কোয়ের্সেটিন।

কোয়ের্সেটিন’য়ের স্বাস্থ্যোপকারিতা

কোয়ের্সেটিন-সহ সকল ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস’কে ধরা হয় শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে। অর্থাৎ দেহের প্রদাহ ও ‘ফ্রি র‌্যাডিক্যাল’য়ের ক্ষতি থেকে এর রক্ষা করতে পারে।

‘ফ্রি র‌্যাডিক্যাল’য়ের কারণে সুস্থ কোষের ক্ষতি হয়। এছাড়া বিভিন্ন রোগ ছাড়াও ক্যান্সার হওয়ার জন্যও দায়ী করা হয়।

তবে গবেষণায় উঠে এসেছে ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস, মাইক্রোবায়াল রোধী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ক্ষতের সেরে ওঠা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে কাজ করে কোয়ের্সেটিন। এছাড়া টাইপ টু ডায়াবেটিস, আর্থাইটিস ও হৃদসংক্রান্ত রোগ হওয়া থেকেও রক্ষা করে।

বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে দেহে দৈনিক ২৫০ থেকে ১ হাজার মি.লি গ্রাম কোয়ের্সেটিন’য়ের প্রয়োজন পড়ে। আর এই পরিমাণ আমাদের আশপাশের খাবার থেকেই গ্রহণ করা সম্ভব।

লাল পেঁয়াজ: সব পেঁয়াজ থেকেই কোয়ের্সেটিন পাওয়া যায়। তবে ছোট একটি লাল পেঁয়াজ থেকেই মিলবে ৪৫ মি.গ্রাম। এছাড়াও পেঁয়াজে থাকে প্রদাহরোধী উপাদান ‘কেম্পফেরল’।

আপেল: আঁশ সমৃদ্ধ এই ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ভিটামিন সি থাকার পাশাপাশি কোয়ের্সেটিন’ও রয়েছে। মাঝারি আকৃতির একটি আপেল থেকে মিলবে ১০ মি.লি. গ্রাম। আর এই উপাদানের বেশিরভাগটাই থাকে খোসায়। তাই খোসাসহ আপেল খাওয়া হবে উপকারী।

গ্রিন টি: যখন উদ্ভিজ্জ ‍উপাদান থেকে দৈনিক চাহিদা মেটানোর কথা বলা হয় তখন চা’য়ের নাম নিতেই হয়। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে গ্রিন টি। কোয়ের্সেটিন ছাড়াও এতে উচ্চ মাত্রায় রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ‘এপিগ্যালোকেটেচিন-৩-গ্যালেট (ইজিসিজি)। গ্রিন টি’র এই প্রধান পুষ্টি উপাদানই কোলেস্টেরল ও রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

আর ১২ আউন্স গ্রিন টি থেকে মিলবে ১৫ মি.গ্রাম কোয়ের্সেটিন।

পাতাকপি: এক কাপ কাঁচা পাতাকপি থেকে মিলবে ২৩ মি.গ্রাম কোয়ের্সেটিন। এভাড়া ভিটামিন কে এবং সি’য়ের উৎস এই কপি।

ব্লুবেরি: স্মুদিতে প্রায়ই ব্যবহার করা হয় এই ফল। এক কাপ থেকে মিলবে ১৪ মি.গ্রাম প্রদাহরোধী কোয়ের্সেটিন। ছাড়াও মিলবে অ্যান্থোসায়ানিন, আঁশ, পটাসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ- যা হাড়ের স্বাস্থ্য ও রক্তচাপ ভালো রাখে।

ব্রকলি: উদ্ভিজ্জ খাবারের উৎসের মধ্যে ব্রকলি থেকে বেশি পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়। আর ছোট এক বাটি ভর্তি ব্রকলি থেকে মিলবে ১৪ মি.গ্রাম কোয়ের্সেটিন।

পেস্তা-বাদাম: বিভিন্ন ধরনের ফাইটোকেমিকেল বিটা ক্যারোটিন, লুটেইন, জিয়াক্সান্থিন, অ্যান্থোসায়ানিন এবং অবশ্যই কোয়ের্সেটিন’য়ের উপযুক্ত উৎস এই মজাদার বাদাম। এক কাপ থেকে মিলবে ৫ মি.গ্রাম।

আরও পড়ুন

Also Read: যেভাবে বুঝবেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে

Also Read: রোগ থেকে দূরে থাকার উপায়

Also Read: যেসব খাবার ঠাণ্ডা-জনিত রোগ দূরে রাখে