স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দুর্বল লাগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
Published : 29 Aug 2023, 07:05 PM
মাসিকের সময়ে নারীরা অবসাদ অনুভব করে থাকেন। এটা মাসিককালীন দুর্বলতা নামে পরিচিত।
২০১৯ সালে ‘ইউএস ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন’য়ে প্রকাশিত সমীক্ষায় দেখা যায়, ৯০ শতাংশ নারী এই সমস্যা অনুভব করেন।
মন ও শরীরের ক্ষেত্রে মাসিক কষ্টকর হওয়ার নানান কারণ রয়েছে।
দুর্বলতার কারণ
এই বিষয়ে হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নয়া দিল্লি’র স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ ডা. অর্চনা ধাওয়ান বাজাজ বলেন, “মাসিকের সময়ে সাধারণ সমস্যাগুলো হল- ব্যথা, ফোলাভাব, মুড সুইং ও মাথা ব্যথা। তবে অনেক নারীর ক্ষেত্রে শক্তি হ্রাস, দুর্বলতা ও ক্লান্তি অনুভব হওয়ায় মতো সমস্যা দেখা দেয়।
হরমোন: মাসিকের আগে ও চলাকালিন অবস্থায় ক্লান্ত ও দুর্বল অনুভূত হওয়ার প্রধান কারণ হল হরমোন।
লৌহের স্বল্পতা: মাসের এই বিশেষ দিনে দেহে লৌহের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই এই সময়ে লৌহ-জাতীয় খাবার খাওয়ার দিকে বিশেষ নজর রাখা উচিত।
চিনির চাহিদা: কার্বোহাইড্রেইট বা মিষ্টি কিছু খাওয়ার স্বাদ মেটাতে বাড়তি প্রক্রিয়াজাত শর্করা গ্রহণ করা যেমন মজাদার তেমনি শক্তিদায়কও। তবে এটার কারণে দ্রুত আরও মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে জাগে।
ডা. বাজাজের মতে, “এটা দেহে সুগার ক্রাশ সৃষ্টি করে ফলে আরও বেশি মিষ্টি খাবার খেতে ইচ্ছা হয়। আর বেশি মিষ্টি খেলে ক্লান্তি লাগতে পারে।”
মাসিক-কালীন দুর্বলতা কাটানোর উপায়
মাসিকের সময়ে সমস্যা যেমন- ক্লান্তিভাব দূর করতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও খাবার তালিকা থেকে কফি, লবণ ও চিনি বাদ দেওয়া উচিত। নানান রকমের ফল ও সবজি মাসিককালীন অস্বস্তি দূর করে। লৌহ ও ভিটামিন বি সমৃদ্ধ শাক সবজি যেমন- কপি এই সময়ে খাওয়া দুর্বলতা কমায় বলে জানান ডা. বাজাজ।
নিজেকে আর্দ্র রাখা জরুরি। কারণ দুর্বলতা ও পানিশূন্যতা পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। দিনে কমপক্ষে দুই লিটার পানি পান করা ও আর্দ্র থাকা জরুরি। রাতে কোমল পানীয় বা কফি পান ঘুমে ব্যঘাত ঘটায়। তাছাড়া অ্যালকোহল গ্রহণ দুর্বলভাব আরও বাড়িয়ে তোলে।
শক্তি বাড়াতে হালকা শরীরচর্চা করা প্রয়োজন। এতে হৃদযন্ত্র সক্রিয় থাকে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। ফলে এন্ডোরফিন নিঃসরণ শুরু হয় বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ।
‘পিরিয়ড ক্রাম্প’ বা ব্যথার জন্য ঘুমে ব্যাঘাত ঘটলে হালকা ব্যায়াম ভালো কাজে দেয়। যদি ব্যায়াম করার সুযোগ বা সুবিধা না থাকে তাহলে কিছুক্ষণ হাঁটা যেতে পারে।
মাসিককালীন দুর্বলতা প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন ভালো ঘুম। প্রতি রাতে একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া, ঘুমের এক ঘন্টা আগে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা এবং ঘুমের জন্য আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করা কার্যকর। আরামদায়ক ঘুম চাইলে সন্ধার পরে ক্যাফেইন ধরনের খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরাম করা অর্থাৎ মানসিক চাপ কমাতে যোগ ব্যায়াম, শ্বাসের ব্যায়াম, হালকা শরীরচর্চা, ধ্যান ও গরম পানিতে গোসল করা উপকারী। ঘুমের আগে এসব চর্চা ভালো ঘুমেও সহায়তা করে।
তবে খুব বেশি ব্যথা অনুভূত হলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন
মাসিকের সময় চুল যে কারণে চিটচিটে হয়