অতিরিক্ত বেইকিং পাউডার ব্যবহার করা অস্বাস্থ্যকর।
Published : 23 Nov 2023, 05:02 PM
কেক বা বিস্কুটের মতো খাবার তৈরিতে বেইকিং পাউডার ব্যবহার করা হয়।
তবে খুব বেশি বেইকিং পাউডার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। এতে বাড়তে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
বেইকিং পাউডার কী?
ভারতের ‘অ্যাস্টার উইমেন অ্যান্ড চিল্ড্রেন হসপিটাল-হোয়াইটফিল্ড’য়ের পুষ্টিবিদ অর্চনা.এস হেল্থশটস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “বেইকিং সোডা ও স্টার্চ থেকে বেইকিং পাউডার তৈরি হয়। এই যৌগ কিছুটা অম্লীয়। এটা দুধ ও পানির মতো তরলের সাথে মিশে কার্বন অক্সাইড নির্গত করে বেইকিংয়ে জমাট বাঁধা বা খামির তৈরিকারী উপকরণ হিসেবে কাজ করে।”
যে কারণে বেইকিং পাউডার পাউডার অস্বাস্থ্যকর
যদিও আমরা জানি যে কোনো বেইক করা কেক বা বিস্কুট স্বাস্থ্যকর নয়। এতে সামান্য পরিমাণ বেইকিং পাউডার ব্যবহার করা গ্রহণযোগ্য তবে খুব বেশি নয়।
ভারতীয় পুষ্টিবিদ গরিমা গোয়াল একই প্রতিবেদনে বলেন, “দুই ধরনের বেইকিং পাউডার রয়েছে যথা- সিঙ্গেল অ্যাক্টিং ও ডাবল অ্যাক্টিং।”
সিঙ্গেল অ্যাক্টিং বেইকিং পাউডার আর্দ্রতার সংস্পর্শে কার্বন ডাইঅক্সাইড ত্যাগ করে এবং বেইকিংয়ে সহায়তা করে। অন্যদিকে ডবল অ্যাক্টিং বেইকিং পাউডার দুটি পর্যায়ে গ্যাস নির্গত করে প্রথমটি মিশ্রণ তৈরির সময় এবং দ্বিতীয়টি তাপ প্রয়োগের সময় আরও কোমলভাব প্রদান করে।”
সোডিয়াম যৌগ: বেইকিং পাউডারে রয়েছে সোডিয়াম বাইকার্বনেট বা বেইকিং সোডা। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যেমন- উচ্চ রক্তচাপ। যারা কম সোডিয়াম যুক্ত খাবার তালিকা অনুসরণ করছেন তাদের এই ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
অ্যালুমিনিয়াম যৌগ: অনেক বেইকিং পাউডারে অ্যালুমিনিয়াম ভিত্তিক অ্যাসিড যেমন- সোডিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সালফেট থাকে। অ্যালুমিনিয়াম যৌগ যদিও বেইকিং পাউডারের কম পরিমাণে থাকে কিন্তু এর অধিক মাত্রায় গ্রহণের ফলে অনেকের বৃক্কে সমস্যা দেখা দেয়। তাই অ্যালুমিনিয়াম মুক্ত বেইকিং পাউডার বাছাই করা উচিত।
হজমে সংবেদনশীলতা: বেইকিং পাউডারে আছে আর্দ্রতা ও তাপের স্পর্শে এসে রাসায়নিক উপাদান যেমন কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণের ক্ষমতা। হজমে সংবেদনশীলতা আছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নানান অস্বস্তি যেমন- পেট ফোলাভাব অথবা পেট ফাঁপা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
গ্লুটেইন: অনেক বাণিজ্যিক বেইকিং পাউডারে স্টার্চ বা বাড়তি উপাদান মিশ্রিত থাকতে পারে যা গ্লুটেইন সমৃদ্ধ।
অর্চনা.এস বেইকিং পাউডারের কয়েকটি স্বাস্থ্যকর বিকল্পের কথা জানান।
দই: খুব ভালো বেইকিং পাউডারের বিকল্প, যা রান্নায় খাবার ঘন করতে সাহায্য করে।
বাটারমিল্ক: এটা খাবারে অ্যাসিডিটি যোগ করে এবং বেইক করা খাবার আর্দ্র রাখে।
ঘোল: দুধের সাথে লেবু বা ভিনিগার মিশিয়ে ঘোল তৈরি করে খাবারে যোগ করা যায়।
ডিমের সাদা অংশ: ফেটে ঘন ফোলাভাব তৈরি করে যোগ করা যায়।
ক্লাব সোডা: বা কোমল পানীয় বেইকিং পাউডারের খুব ভালো বিকল্প। এটা খাবারে কার্বনেইশন যোগ করে খামির তৈরিতে সহায়তা করে।
লেবুর রস: পাঁচ গ্রাম বেইকিং পাউডারের পরিবর্তে এক গ্রাম বেইকিং সোডার সাথে ২.৫ গ্রাম লেবুর রস যোগ করে একই ফলাফল পাওয়া যায়।
কুকিং পাউডার: বেইকিং সোডা এবং দানাদার অ্যাসিডের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয় যা বেইকিং পাউডারের মতোই কাজ করে।
ভিনিগার: বেইকিং সোডার সাথে মিশে খুব ভালো খামির তৈরিতে সহায়তা করে যা বেইকিং পাউডারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
খাবারের ধরন বুঝে এসব বিকল্প ব্যবহারের মাধ্যমে খাবারের স্বাদ অটুট রাখা যায় এবং পুষ্টি গুণ বজায় থাকে।
আরও পড়ুন