যদি নিজেকে বেশি অগোছালো মনে হয় তবে কিছু সহজ নিয়ম পালন করতে পারেন।
Published : 25 Jan 2024, 05:27 PM
প্রতিদিন পরিপাটি থাকাটা কষ্টকর হলেও কিছু বিষয় নিয়মিত করলে কাজটা সহজ হয় অনেকটাই।
আর এজন্য দরকার দৈনন্দিন কাজে ছোটখাট পরিবর্তন।
সকালে তাড়াতাড়ি ওঠা
ওয়াশিংটন-ভিত্তিক পেশাদার সংগঠক এবং ‘শান্তাইজ ইওর স্পেস’য়ের প্রতিষ্ঠাতা শান্তায় ডাকওর্থ এই বিষয়ে বলেন, “সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে বিষয়টা অনেকের কাছে ভয়ঙ্কর। তবে সকালে তাড়াতাড়ি ওঠা মানেই ভোরের পাখি হয়ে যাওয়ার নয়।”
রিয়েলসিম্পল ডটকমে’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “ঘুম গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিক সময়ের কমপক্ষে ২০ মিনিট আগে ঘুম থেকে উঠলে দেখা যায় নিজের কিছু কাজ খুব সহজেই গুছিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়।”
যে কোনো কাজ শুরুর আগে যদি সঠিক পরিকল্পনা করে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয় তাহলে কাজ খুব সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করা যায়।
সকালে ঘুম থেকে উঠে সারাদিন কী কী কাজ করতে হবে, সেটার তালিকা করা ও মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা কাজের গতি বাড়িয়ে দেয় এবং সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করে।
এক সপ্তাহ এই পদ্ধতি অনুসরণ করে পরিবর্তণ লক্ষ করা যেতে পারে।
প্রতিদিন কাপড় ধোয়া
অনেকেই ময়লা কাপড় জামাতে থাকেন একবারে সকল কাপড় ধোয়ার জন্য। এটা অনেক ক্ষেত্রেই সময় বাঁচাতে পারে।
“তবে পরিবার বড় হলে প্রতিদিনের কাপড় প্রতিদিন ধুয়ে ফেলাই ভালো। নোংরা কাপড়ের স্তুপ ঘরে এলোমেলোভাব আনে”- বলেন ডাকওর্থ।
তিনি পরামর্শ দেন, “এর একটি সহজ উপায় হল সকালে ঘুম থেকে উঠেই ময়লা কাপড় ধুতে দেওয়া এবং রাতে ভাঁজ করে রাখা। এর ফলে বাড়িতে একটি গোছানো পরিবেশ তৈরি হয়।”
কালকের শুরু আজ রাত থেকে
নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক বাড়ি-ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘ক্লাটার টু ক্ল্যারিটি’র প্রতিষ্ঠাতা লিন্ডসে মাহান্না বলেন, “পরের দিনের প্রস্তুতি শুরু হওয়া উচিত আগের দিন রাত থেকে। এই পদ্ধতির সাহায্যে পরের দিনটা গোছানো ও সুন্দরভাবে শুরু করা যায়।”
তিনি বলেন, “প্রতি রাতে পরের দিনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। কোন কাপড় ধুতে হবে, কী রান্না করা হবে, রাতের খাবার কী তৈরি করা হবে, কী নাস্তা যাবে- এসব কিছুই আগের দিন ঠিক করে ফেলা ভালো।”
কোনো বিশেষ কাজের জন্য যদি অ্যালার্ম বা মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে আগের রাতেই সেটা ঠিক করে নেওয়া উচিত”- মন্তব্য করেন তিনি।
যদি একা থাকেন তাহলেও পরের দিনের প্রস্তুতি নিতে হবে আগের দিন রাতেই। সকালে লাগতে পারে এমন থালা-বাসন আগের দিন রাতেই পরিষ্কার রাখা অথবা বাইরে যাওয়ার সময় কোন পোশাক পরা হবে সেটা আগের রাতেই ঠিক করে রাখা- কাজে গোছালো ও খুব বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
নিয়মিত অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরানো
মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘জাস্ট বি অর্গানাইজিং’য়ের ব্রায়ান এবং এরিকা স্প্রুইল, প্রতিদিন ‘ডিক্লাটার’ বা অপ্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে রাখার পরামর্শ দেন।
তার মানে এই নয় যে সারাক্ষণই রান্নাঘর, আলমারি বা ড্রয়ারের জিনিসপত্র গোছাতে হবে।
তিনি বলেন, “অপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে মুক্তি মানে হল সঠিক স্থানে জিনিসটা রাখা। কাজ শেষে সেই জিনিস ঠিক স্থানে রাখা এবং শেষ হয়ে গেছে বা আর প্রয়োজন হবে না এমন জিনিস সাথে সাথেই সরিয়ে ফেলা, যেমন- মেইকাপের জিনিস গুছিয়ে রাখতে রাখতে শুকিয়ে গেছে এমন মাসকারার বোতল ফেলে দেওয়া বা চা-কফির অপ্রয়োজনীয় ক্যান বা বোতল সরিয়ে ফেলতে হবে।”
জিনিসপত্রের দামের দিকে নজর রাখা
ঘর যদি গুছিয়ে রাখতে চান তাহলে ‘এপিক গোল ওয়ার্কবুক’ গ্রন্থের লেখক অ্যানা ডেভিড দূরদর্শী হওয়ার পরামর্শ দেন।
মার্কিন এই লেখক ও প্রকাশক বলেন, “গোছানো থাকতে যদি নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য পূরণ করতে চান তাহলে মনে মনে সেটার একটা চিত্র অঙ্কন করা এবং অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে সামগ্রিক চিত্র ধারণ করে সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।”
করণীয় কাজ বা বিষয়-গুলো যদি লিপিবদ্ধ করে অফিস, ঘর, রেফ্রিজারেইটর বা ড্রয়ারের সামনে ঝুলিয়ে রাখা যায় তাহলে সেটাতে প্রতিদিন চোখ পড়বে।
প্রতিদিন করা লাগবে, এমন একটি করে কাজ আলাদা করতে হবে।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, “যদি এক সপ্তাহে একবার করে হলেও এই কাজের তালিকা চোখে পড়ে তাহলে নিজেকেই নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে মনে করিয়ে দেওয়া যাবে। আর কাজও করা যাবে গুছিয়ে।”
ছবি: পেক্সেল ডটকম।
আরও পড়ুন
ভ্রমণের ব্যাগ গোছানোর কার্যকর উপায়