ইজিপ্ট বা মিশরের কথা শুনলে প্রথমে পিরামিডের কথাই মনে পড়ার কথা। আর হয়ত চোখে ভাসবে রানী ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্য।
Published : 30 Jul 2023, 06:22 PM
প্রাচীন মিশরে ভ্রমণ করতে চাইলে অন্তত একমাস আগ থেকে প্রস্তুতির প্রয়োজন পড়বে। আর এই বিষয়ে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বিস্তারিত জানাচ্ছেন শৌখিন পরিব্রাজক সায়মা সিদ্দিকা।
মিশর বেড়াতে যেতে চাইলে অবশ্যই কমপক্ষে একমাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। কেননা ভিসা প্রসেস হতে সাত থেকে ১০ কর্ম দিবস বলা হলেও কাগজপত্র তৈরি করে নেওয়াসহ ভিসার আবেদন পত্র জমা থেকে ভিসা হাতে পাওয়া পর্যন্ত মোটামোটি ১৫ থেকে ২০ দিনের বেশি সময় চলে যায়।
নিজের ভিসা নিজে করতে চাইলে নিয়মানুযায়ী সকল কাগজপত্র নিয়ে সরাসরি ঢাকার গুলশানে অবস্থিত মিশরীয় দূতাবাসে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন জমা দিতে হবে।
টুরিস্ট ভিসার জন্য যা কিছু প্রয়োজন হয়
* মূল পাসপোর্ট (৬ মাসের মেয়াদসহ) * সাম্প্রতিক দুই কপি ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে ৩.৫ এক্স ৫.০ সে.মি. সাইজের ম্যাট প্রিন্ট) * বিজনেস বা ভিজিটিং কার্ড * ন্যাশনাল আইডির কপি * এনওসি/ জিও/ ট্রেড লাইসেন্স ইংরেজিতে নোটারি করা * ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং সলভেন্সি সার্টিফিকেট (অ্যাকাউন্টে জন প্রতি কমপক্ষে ২ লাখ টাকা দেখাতে হবে) * স্টুডেন্ট আইডি কার্ড (অভিভাবকের সাথে সন্তানের ভ্রমণের ক্ষেত্রে) * জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি (অভিভাবকের সাথে শিশুদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে) * বিয়ের সার্টিফিকেট (শুধুমাত্র নববিবাহিত দম্পতিদের জন্য) * দূতাবাস নির্ধারিত ভিসা অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম (পূরণ করা) * ভিসা অফিসার বরাবর লেখা আবেদন পত্রে ভ্রমণের কারণ ও বিবরণসহ * ভিসা ফিস (সিঙ্গেল এন্ট্রি ৭ হাজার টাকা এবং মাল্টিপল এন্ট্রি ১০ হাজার টাকা)
দেশের বাইরে যে কোনো জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার আগে অনেক রকম ছোট ছোট টিপসের দরকার হয়। যেগুলো কোনো বই, ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া মুশকিল।
তবে সশরীরে গিয়ে প্রতিদিন অভিজ্ঞতা আকারে এগুলো পাওয়া যেতে পারে।
আমার মিশর ভ্রমণ থেকে যেসব তথ্য পেয়েছি তা থেকে কয়েকটা মাত্র লিখতে চেষ্টা করলাম।
১। উবারের চেয়ে ‘কারিম’ নামক অ্যাপয়ের মাধ্যমে বাইক বা গাড়ি পাওয়া বেশি সহজ। তবে ড্রাইভারের পাশাপাশি গুগল ম্যাপের সাহায্যে নজর রাখতেই হবে। তা না হলে, এক রাস্তায় কয়েক বার চক্কর খেতে হতে পারে।
২। মোবাইলের সিম কেনার সময় অবশ্যই ইন্টারনেট বা কল টাইমের হিসাব বুঝে নিতে হবে এবং কীভাবে ব্যালেন্স চেক করতে হবে তা জেনে রাখতে হবে। কারণ মোবাইলে যা টেক্সট আসবে সবই আরবী ভাষায়। দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য যে, এখানে মুখের কথার ওপর নির্ভর করলে ‘ধরা’ খাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।
৩। মিশরের দূরপাল্লার যাত্রায় বাসের চেয়ে ট্রেন অনেক আরামদায়ক। যদিও ট্রেন সময় মতো গন্তব্যে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তারপরও খরচ এবং বসার জায়গা পর্যাপ্ত প্রশস্ত হওয়ার কারণে আমি ট্রেনের যাত্রাকে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করছি।
তাছাড়া প্রতিবার রাতের বাসে চলতে পথে মধ্যরাতে সেনাবাহিনীর তল্লাশী দেখেছি। কোনো যাত্রীর হাতব্যাগও তারা বাদ দেয় না। তুমুল শীতের মধ্যে ৩০/৪০ জনকে লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে একেকটা লাগেজ খুলে তারা জিনিসপত্র নেড়েচেড়ে দেখে। যে কার্যক্রমটা ট্রেনে হয় না।
৪। হোটেল বুকিং দেওয়ার জন্য কোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপয়ের সাহায্য না নিয়ে শুধু পছন্দের হোটেল খুঁজে নিয়ে গুগল/ফেইসবুক থেকে ফোন নম্বর জোগাড় করে সরাসরি কথা বলে রুম ভাড়া করলে খরচ কম পড়বে।
৫। অযথা ভোগান্তি থেকে বাঁচাতে চাইলে গুগল ম্যাপে হাঁটার রাস্তা কোনোভাবেই অনুসরণ করা যাবে না। অনেকক্ষেত্রেই মানুষের বাসার ভেতরের রাস্তা যখন যাতায়াতের পথ হিসেবে দেখানো থাকে এবং অনেকটা পথ হেঁটে গিয়ে দেখা যায় দরজা তালা দেওয়া তখন আবার উল্টো পথে ঘুরতে হয়।
সেজন্য ম্যাপে দেখানো যে কোনো চারচক্র যানের পথ বেছে নেওয়াটাই নির্ভরযোগ্য।
গিজার পিরামিড, লাক্সরের টেম্পেল ও সমাধি, নীল নদে ক্রুজ, আসওয়ান, আবু সিম্বেল, লোহিত সাগর, কায়রোতে ইসলামিক স্থাপত্য, দক্ষিণ সিনাইয়ের সমুদ্র সৈকত, মিশরীয় যাদুঘর, সাদা মরুভূমি, আলেকজান্দ্রিয়া, সিওয়া ওয়েসিস, সেন্ট ক্যাথরিনের টেম্পেল, কপটিক কায়রো, হাথোর টেম্পেল ইত্যাদি।
আরও পড়ুন