“দাফনের বিষয়ে এখনো পারিবারিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নেইনি, রাতের মধ্যে হতে পারে।”
Published : 26 Jul 2024, 01:31 PM
প্রয়াত ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদের মরদেহ দেশে নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে, তবে সেই দিন তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রয়াত গায়কের ছেলে আযরাফ রাকিন আহমেদ।
রাকিন শুক্রবার গ্লিটজকে বলেন, “মরদেহ আনার এখনো কোনো তারিখ চূড়ান্ত হয়নি, চেষ্টা চলছে। রাতে তারিখটা নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে কাল বা পরশু আসতে পারে। দাফনের বিষয়ে এখনো পারিবারিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নেইনি, রাতের মধ্যে হতে পারে।”
বনানীতে বাবা সুরকার কমল দাশগুপ্তের কবরে শাফিনকে দাফন করা হবে-কিছু সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাকিন বলেন, "বনানীতে হতে পারে। সেটাও রাতে চূড়ান্ত করা হবে।"
মাইলস ব্যান্ডের অন্যতম ভোকালিস্ট শাফিন আহমেদ জুলাইয়ের ৯ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে কনসার্ট করেন তিনি। ভার্জিনিয়ায় গত ২০ জুলাইয়ে আরেকটি কনসার্টে অংশ নেওয়া আগেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন হন গায়ক। হাসপাতাল থেকেই বৃহস্পতিবার সকালে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
মাইলসের কি বোর্ডিস্ট মানাম আহমেদ জানিয়েছেন, শাফিন হৃদরোগে ভুগছিলেন অনেক দিন ধরেই। তার হৃদযন্ত্রে রিং পরানো ছিল। সমস্যা ছিল কিডনিতেও।
“সব মিলিয়ে তার শরীরের অঙ্গগুলো অকার্যকর হতে থাকে, যেটা তাকে আর সার্ভাইব করতে দেয়নি। এই শরীরে এত ঘন ঘন ট্রাভেল করাটা ঠিক হয়নি। কিছুদিন আগেও দেশের বাইরে ছিল। এত ট্রাভেল আর অনিয়মে অসুস্থ হয়ে পড়ে।”
দেশে থাকতেই এ ব্যান্ডশিল্পী অসুস্থ ছিলেন কি না জানতে চাইলে তার ছেলে রাকিন গ্লিটজকে বলেন, “সুস্থ ছিলেন, কনসার্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। কয়েকদিন আমার আম্মু (শাফিনের স্ত্রী নাহীন আহমেদ) সেখানে গিয়েছেন।
এখন ঢাকা থেকে হামিন চাচা (হামিন আহমেদ, শাফিনের বড় ভাই) সেখানে গেছেন। সেখান থেকে সব প্রসেস সম্পন্ন করে মৃতদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করা হবে।
আশি ও নব্বইয়ের দশকের কিশোর-তরুণ শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিয়ে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এ ব্যান্ড তারকা দেশে ও দেশের বাইরে কনসার্টও মাতিয়েছেন গিটার হাতে। তার ‘চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি’, নীলা, আজ জন্মদিন তোমার, ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘ধিকি ধিকি’ এর মত গান মুখে মুখে ফিরেছে সবার।
বাংলাদেশের সংগীত অঙ্গনের দুই মহারথী সংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগম এবং সুরকার কমল দাশগুপ্তের ছেলে শাফিন নিজে ছিলেন বেইজ গিটারিস্ট, সুরকার এবং গায়ক। ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তার জন্ম।
বড় ভাই হামিন আহমেদসহ ইংল্যান্ডে পড়তে গিয়ে পশ্চিমের সংগীতের সঙ্গে সখ্য হয় শাফিনের। শুরু হয় তার ব্যান্ড সংগীতের যাত্রা।
ফরিদ রশিদের হাত ধরে ১৯৭৯ সালে তারা গড়ে তোলেন ব্যান্ড দল ‘মাইলস’। প্রথম কয়েক বছর তারা বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে ইংরেজি গান গাইতেন। এরমধ্যেই প্রকাশিত হয় দু’টি ইংরেজি গানের অ্যালবাম ‘মাইলস’ ও ‘এ স্টেপ ফারদার’। পরে মাইলসের বাংলা গানের প্রথম অ্যালবাম ‘প্রতিশ্রুতি’ বের হয় ১৯৯১ সালে।
ওই অ্যালবামের জনপ্রিয়তার পর বিটিভিতে বিভিন্ন গানের অনুষ্ঠানে দেখা যেতে থাকে মাইলসকে। ধীরে ধীরে মাইলস দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ডদলে পরিণত হয়।
মাইলসের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘প্রথম প্রেমের মতো’, ‘গুঞ্জন শুনি’, ‘সে কোন দরদিয়া’, ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘ধিকি ধিকি’, ‘পাহাড়ি মেয়ে’, ‘নীলা’, ‘কি যাদু’, ‘কতকাল খুঁজব তোমায়’, ‘হৃদয়হীনা’, ‘স্বপ্নভঙ্গ’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘শেষ ঠিকানা’, ‘পিয়াসী মন’, ‘বলব না তোমাকে’, ‘জাতীয় সঙ্গীতের দ্বিতীয় লাইন’ ও ‘প্রিয়তমা মেঘ’।
ভাইয়ের সঙ্গে বিবাদে মাইলসের সঙ্গে তিন দশকের পথচলার সমাপ্তি টেনে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বেরিয়ে আসেন আসেন শাফিন আহমেদ। পরে তিনি গড়ে তোলেন নিজের ব্যান্ড দল ‘ভয়েস অব মাইলস’।
এই খবর আসবে, বুঝতে পারিনি: শাফিনের ছেলে রাকিন
ঝরে গেল ব্যান্ড সংগীতের আরেক তারা, চলে গেলেন শাফিন আহমেদ
ধ্রুপদী সংগীত পরিবারের এক রকস্টার শাফিন আহমেদ
হুট করে একটা মানুষ নাই, ভাবা যাচ্ছে না: প্রিন্স মাহমুদ
যেসব গানে বেঁচে থাকবেন শাফিন আহমেদ
মিউজিক এখন কেউ কিনে শোনে না: শাফিন আহমেদ
আসছে শাফিনের নতুন গান 'রুবারু'
আবারও 'মাইলস' ছাড়লেন শাফিন আহমেদ
নানামুখী অভিযোগ হামিনদের, 'নোংরামো' চান না শাফিন
পুরনো জিনিস ঘাঁটানোর দরকার নেই: শাফিন আহমেদ
গানে গানেই 'লিজেন্ড' বিতর্কের জবাব দিলেন ফুয়াদ-শাফিন