‘অসত্য প্রচারের’ অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা।
Published : 24 Nov 2022, 01:19 PM
পিবিআই কর্মকর্তা নাঈমা সুলতানার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাতেও সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আবদুল হালিম বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে আদালত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওই মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”
গত ১৮ অক্টোবর নগরীর খুলশী থানায় করা মামলাটি পুলিশ তদন্ত করছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) খুলশী থানার এসআই আরিফুর রহমান গ্রেপ্তার দেখানোর ওই আবেদন করেন। তবে এই মামলায় বাবুল আক্তারকে রিমান্ডে চেয়ে কোনো আবেদন করা হয়নি।
বাবুল আক্তারকে এদিন চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। তার উপস্থিতিতে শুনানি শেষে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে।
আইনজীবী মুরাদ বলেন, “আমরা বাবুল আক্তারের জামিন চেয়ে এবং উনার সাথে এক ঘণ্টা কথা বলতে চেয়ে আবেদন করেছি। এ দুটো বিষয়ে কোনো আদেশ হয়নি। পরে হয়ত সময় দেওয়া হবে শুনানির জন্য।”
স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলার আসামি বাবুল আক্তার, তার বাবা ও ভাইসহ চারজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অসত্য প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেছিলেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা।
এর আগে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আরেক মামলায় ১০ নভেম্বর বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেয় ঢাকায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
পিবিআই কর্মকর্তা নাঈমা সুলতানার করা মামলাটির আসামিরা হলেন- সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার, তার বাবা আব্দুল ওয়াদুদ, ভাই হাবিবুর রহমান লাবু এবং প্রবাসী ইউটিউবার ইলিয়াছ হোসাইন, যিনি এক সময় দেশে সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, “আসামিরা পরষ্পর যোগসাজোশে বাংলাদেশ পুলিশকে ভারতীয় বাহিনী বলে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদ্রোহসহ বন্ধু প্রতীম রাষ্ট্র ভারতকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্র করে এবং জনসক্ষে মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য প্রচার করে মানহানী করে।”
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর এই চার আসামির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকার ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
বনজ কুমারের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, “বাবুল আক্তার, তার ভাই ও বাবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় কথিত সাংবাদিক ইলিয়াছ হোসাইন বিদেশে পলাতক থাকা অবস্থায় গত ৩ সেপ্টেম্বর তার ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে ‘স্ত্রী খুন, স্বামী জেলে: খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে ৪২মিনিট ২১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন।
“ওই ভিডিওতে বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে তদন্তাধীন মিতু হত্যা মামলার তদন্তকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে প্রচার করা হয়।”
স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় ‘স্বীকারোক্তি আদায়ে’ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে এর আগে পিবিআই প্রধানসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছিলেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার।
আদালতে করা ওই আবেদনে বাবুল আক্তার বিবাদী করেছিলেন পিবিআই বর্তমান প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, পিবিআইর চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম মহানগরের এসপি নাঈমা সুলতানা, তৎকালীন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা, সাবেক পরিদর্শক এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম ও পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবিরকে।
শুনানি শেষে ওই আবেদন ২৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে খারিজ হয়ে যায়।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই। শুনানি শেষে গত ১০ অক্টোবর তা গ্রহণ করেছেন আদালত।
পুরনো খবর
এবার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পিবিআই’র আরেক কর্মকর্তার মামলা
মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ
এবার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পিবিআই প্রধানের মামলা
মামলা আর নিরাপত্তা: বাবুল আক্তারের দুই আবেদনই খারিজ
মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারের মামলায় তার বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র
পিবিআই প্রধানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ‘হেফাজতে নির্যাতনের’ অভিযোগ বাবুল আক্তারের