“যে প্রশাসনের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে পত্রিকায় হাজার খানেক সংবাদ প্রকাশিত হতে পারে, সেখানে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো অবশিষ্ট আর কি থাকে?" বলছেন অধ্যাপক আব্দুল হক।
Published : 18 Feb 2024, 07:33 PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতির চলমান আন্দোলন দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার।
তিনি বলেছেন, শিক্ষক সমিতির নির্বাহী কমিটির একটি অংশ তার ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে। এ আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সুনাম ক্ষুণ্ন’ করার পাশাপাশি দেশের মানুষকে ‘বিভ্রান্ত’ করছে।
রোববার বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর চারুকলা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ কথা বলেন।
বিভিন্ন বিভাগে প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত না মেনে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান, কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি।
শিক্ষক সমিতির এ আন্দোলন প্রসঙ্গে উপাচার্য শিরীণ আখতার বলেন, “কোনো ধরনের অনিয়ম হয়ে থাকলে শিক্ষক সমিতির বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি সংক্ষুব্ধরা দেশের প্রচলিত আইনেও আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন।
“কিন্তু তারা সেটা না করে আমার কার্যালয় ঘেরাও এবং আমার ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছে। এতে প্রতীয়মান হয়, নিয়ম-অনিয়ম নয়, তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল করে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করা।”
১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষক সমিতির এ আন্দোলন প্রশাসনিক কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে প্রতিষ্ঠানকে হেয় করছে।
শিক্ষক সমিতি সমস্যা সমাধানে আগ্রহী নয় মন্তব্য করে উপাচার্য দাবি করেন, সমিতির নেতৃবৃন্দকে আলোচনার জন্য বারবার আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা বসতে আগ্রহী হননি।
শিরীণ আখতার বলেন, “শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সরকারের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছে।”
এর আগে শিক্ষক সমিতি যে ২৬ দফা দাবি তুলেছিল তার বেশির ভাগই মেনে নেওয়া হয়েছে দাবি করে উপাচার্য বলেন, শিক্ষকদের স্বার্থে সমস্যা সমাধানে ‘যৌক্তিক’ দাবি মেনে নিতে তিনি বদ্ধপরিকর।
উপাচার্যের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "প্রশাসন যদি সঠিক পথে চলে, তাহলে কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কিছু করতে পারে না। নিশ্চয়ই তাদের দুর্বলতা আছে।
“যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে পত্রিকায় হাজার খানেক সংবাদ প্রকাশিত হতে পারে, সেখানে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো অবশিষ্ট আর কি থাকে?"
‘সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা’
গত ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের বিজয়, সিক্সটি নাইন ও সিএফসি গ্রুপের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়ায়। দুদিনে তিন সংঘর্ষে বগিভিত্তিক তিন পক্ষের জনা ত্রিশেক নেতাকর্মী আহত হয়।
এ প্রসঙ্গে উপাচার্য শিরীণ আখতার বলেন, সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘সংযম’ প্রদর্শন করেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে ঘটনার সাথে জড়িতদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যপক বেনু কুমার দে, পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্ত্তী, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক সজীব কুমার ঘোষ, প্রক্টর নুরুল আজিম শিকদার, রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ।
উপাচার্য, উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ফের আন্দোলনে চবি শিক্ষক সমিতি
উপাচার্য, উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে চবি শিক্ষক সমিতি
চবি আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আন্দোলনের ডাক শিক্ষক সমিতির